পার্বতীপুর-চিলমারী লাইনে ১ বছর ৩ মাস ১৮ দিন থেকে ট্রেন চলছে না
পার্বতীপুর-চিলমারী-পার্বতীপুর লাইনে চলাচলকারী যাত্রীবাহি ট্রেনটি ২০২০ ইং এর ৭ ই মার্চ করোনার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো । ১ বছর ৩মাস ১৭ দিন পেড়িয়ে গেলেও চিলমারী লাইনে চলাচলকারী একটি মাত্র ট্রেন অজ্ঞাত কারণে এখনও চালু করা হয়নি এবং কবে চালু হবে , নাকি আদৌ হবে না সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিরবতা জনমনে ধু¤্রজালের সৃষ্টি করেছে।
চিলমারী উপজেলাটি এমনিতেই যোগাযোগ ব্যবস্থার দূরাবস্থার কারণে দেশের পশ্চাৎপদ একটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়াও প্রতি বছর বন্যা, নদী ভাঙ্গন এবং খরায় ফসলহানি এই এলাকার মানুষের নিত্য দিনের সাথী। জীবন-জীবিকার তাগিদে তাই এই সব এলাকার দিনমজুরকে প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ও মার্চ-এপ্রিল এই কর্মহীন সময়গুলিতে অভাবের তাড়নায় কাজের অন্বেষনে পার্বতীপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। তাদের সাধ্যের মধ্যে কম খরচে যাতায়াতের মাধ্যম ছিলো এই ট্রেনটি। এ ছাড়া এই সব এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিকটবর্তী জেলাগুলি থেকে প্রয়োজনীয় মালামাল কম পরিবহন খরচে আনা নেওয়ার জন্য রেলপথকেই সাশ্রয়ী বাহন হিসাবে ব্যবহার করতেন।
প্রধানমন্ত্রির ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ইং সনে চিলমারীর সুধীসমাবেশে চিলমারী নৌবন্দরের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ঘোষনা দেবার পর সঙ্গত কারণেই এলাকার মানুষ ধারণা করেছিল খুব তাড়াতাড়ি ট্রেন চালু হবে এ উপজেলাটির সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলওয়ে বিভাগের পক্ষ থেকে বৈল্পবিক পরিবর্তন ঘটানো হবে। কিন্Í বাস্তবে হয়েছে উল্টো। উপজেলার মধ্যে অবস্থিত বালাবাড়ী হাট রেলওয়ে ষ্টেশন ও রমনা বাজার রেলওয়ে ষ্টেশনে রেল বিভাগের একটি প্রাণীও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ষ্টেশন দুটিতে এখন পরিত্যাক্ত ভ‚তুরে পরিবেশ বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য চিলমারী ও এর সংলগ্ন এলাকাগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ণের লক্ষ্যে পাকিস্তান আমলে ১৯৬৭ ইং সনে কুড়িগ্রাম-চিলমারীর ২৮.৫৫ কিলোমিটার রেলপথে কয়লা চালিত বাষ্পিয় ইন্িজনে কয়েকটি বগি সংযোগ করে প্রথম যাত্রা শুরু করে। সে সময় চিলমারী রেলওয়ে স্টেশনটি দিয়ারখাতা চাকলীর পাড়ায় নির্মাণ করা হয়েছিলো যা ১৯৭১ ইং সনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় তারপর থেকে রমনা বাজার রেলওয়ে স্টেশনটি এ লাইনের শেষ স্টেশন হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
২০০২ ইং সনের আগে পার্বতীপুর-চিলমারী রুটে দুইটি এবং লালমনিরহাট-চিলমারী রুটে দুইটি করে দিনে রাতে মোট ৪টি যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল করতো। কর্তৃপক্ষ ২০০২ ইং সনে আকস্মিকভাবে এই লাইনের ৪টি ট্রেনের মধ্যে ৩টির যাতায়াত অজানা কারনে বন্ধ করে দেন। বর্তমান সময়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অত্র এলাকার জনগণের দূর্ভোগ কমাতে ট্রেনগুলি পূনরায় চালুর করা সময়ের দাবী বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন।