পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তিত মেহেরপুরের চাষি
তীব্র তাপদহ,অনাবৃষ্টি,খাল ভরাট,শ্রমিক সংকট ও পাটের ন্যায্যা মূল্য না পাওয়ায় মেহেরপুরে কমেছে পাট চাষ। মতারপরেও সেটুকু পাট চাষ হয়েছে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় সেটা জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তিত চাষী।
মেহেরপুর কৃষি স¤প্রসারন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর কম। এর প্রধান কারন পাট জাগ দেওয়ার পানি সংকট। এয়াড়াও রয়েছে পাটের নিম্নমুখি বাজার দর। চাষীরা পাট আবাদ করতে যা খরচ করছে সেটা পাট বিক্রি করে পাচ্ছেনা। তাই লোকসানের থেকে বাঁচতে চাষীরা সবজিসহ অন্যান্য অর্থকরি ফসল চাষে ঝুঁকছে।
সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের পাট চাষী শরিফুল গাংনীর চোখ জানান, ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু পাট বিক্রি করে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা হচ্ছে এতে অনেক লোকশান হচ্ছে। তাই গত বছর ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করলেও এবার ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। জালানীর জন্য পাটখড়িটা খুব দরকার তাই বাধ্য হয়ে পাট চাষ করি।
সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রামের পাট চাষী মনিরুল ইসলাম গাংনীর চোখ জানান, বিগত বছরগুলোতে দীর্ঘ অনাবৃষ্টি থাকার কারণে পুকুর, খাল—বিল ও নালাগুলোতে পানি ছিল না। যে কারণে কৃষকরা পাট জাগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যায় ভুগেছিল। পাট জাগ দেওয়ার মতো পানির ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে পুকুর ভাড়া করে সেখানে পানি দিয়ে পাট জাগ দিয়েছিল। তাতে খরচ হয় বেশি। আর সরকারি যে নদী নালা খাল বিল আছে সেখানে পাট জাগ দিতে গেলে মৎস্য অধিদপ্তরের বাধার সম্মুখিন হতে হয়। পাট জাগ দেওয়ার বড় মাধ্যম ছিল ভৈরব নদী। কিন্তু ভৈরব নদী খননের পর থেকে প্রশাসন আর পাট জাগ দিতে দেয়না চাষীদের।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার গাংনীর চোখ কে জানান, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অনেক পরিমাণে পাটের চাষ কম হয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণেই কৃষকেরা সঠিক সময় পাটের বীজ বপন করতে পারেনি। এছাড়াও পাট পচানোর জায়গা সংকট। নদী নালা খাল মিলে মৎস্য বিভাগ থেকে পাট পাচাতে দিতে না দেওয়াই পাটের চাষ কমেছে।