নওগাঁর মান্দায় গরুর দাম নিয়ে হতাশ খামারীরা
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় এবার ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক গরুর খামার।
এ উপজেলার অসংখ্য খামরী ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে (গরু,ছাগল,ভেড়া,মহিষ এবং গাড়ল) সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার গবাদিপশু মোটা তাজা করার লক্ষ্যে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে এ উপজেলার হাট বাজার গুলোতেও মাংসের চাহিদা তুলনামুলক ভাবে কম।
চলতি বছরে ঈদুল আযহায় করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গরু হাটে বিক্রি করা ও বাজার দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে এখানকার খামারীরা। মান্দা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ইউএলও ডাঃ অভিমান্য এসব তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নওগাঁর মান্দা উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে গরু মোটাতাজা করছেন খামারীরা।
গরুর মাংস উৎপাদনের দিক থেকে জেলার অনান্য উপজেলার তুলনায় এ উপজেলা অনেক এগিয়ে।
উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ২০ হাজার গরু মোটাতাজা করণ খামার গড়ে উঠেছে।
স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত গরু থেকে ৯০ ভাগ মাংসের চাহিদা পূরণ করা হয়। ঈদুল আযহায় বিক্রি করার জন্য (গরু,ছাগল,ভেড়া,মহিষ এবং গাড়ল) সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার গবাদীপশু লালন পালন করছে খামারীরা।
এ উপজেলায় গবাদীপশু কেনা বেচা করার জন্য বড় হাট গুলোর মধ্যে সতিহাট, চৌবাড়িয়া,দেলুয়াবাড়ি,
প্রসাদপুর উল্লেখ করার মতো। এই হাট গুলো ছাড়াও ঈদুল আযহায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ২০ থেকে ২৫ টি অস্থায়ী হাট বসে।
করোনার কারণে এবার এসব হাট বসবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কিত খামারীরা। উপজেলার খামারীদের মধ্যে অনেক বেকার যুবক সরকারি-আধা সরকারি ব্যাংক এবং এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলেছে।
এখানকার গরু স্থানীয় চাহিদা মেটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।
এখন শুধু ঈদুল আযহার আপেক্ষায় দিন গুনছে এলাকার গরুর খামারীরা।
এখানকার গরু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার নৈলঘর গ্রামের খামারী রফিকুল ইসলাম বলেন, পেশায় তিনি একজন মিষ্টি ব্যাবসায়ী এবং খুবই দরিদ্র মানুষ । মিষ্টি ব্যাবসার পাশাপাশি তিনি প্রায় ১৫ বছর যাবৎ গরু লালন-পালন করে অাসছেন। গত বছরও বেশ কয়েকটি গরু ছিল,যা বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে মোটামুটি টাকা লাভ হয়েছিল, বর্তমান ৩ টি গরু আছে। করোনার কারণে বাজারে ভাল দাম মিলবে কিনা এই আতঙ্ক মনে সব সময় কাজ করছে।
মান্দার কাঁশোপাড়া গ্রামের খামারী মিলন ফকির বলেন, এবার ঈদে কি রকম দামে গরু বিক্রি করতে পারবো সেটা জানিনা। বাজারে গোখাদ্যের দাম অগের তুলনায় অনেক বেশি। গরু বিক্রি করে ভালো দাম না পেলে ঋনের টাকা পরিশোধ করাই কঠিন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ইউএলও ডাঃ অভিমান্য বলেন, খামারীদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করে আসছি। তাদের পালনকৃত গবাদীপশু নিয়ে যে কোন সমস্যায় প্রাণী সম্পদ বিভাগ সবসময় পাশে থাকবে। ইতোমধ্যে সিলেট এবং চট্টগ্রামের গরু ব্যাবসায়ীরা এ এলাকার গরুগুলো বেশি দামে কেনার জন্য বিভিন্নভাবে খামারীদের সাথে যোগাযোগ করছেন।এছাড়াও অনলাইনে গরুর হাট নামক একটি প্লাটফর্ম চালু অাছে। সেখান থেকেও গরু কেনা বেচার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সুতরাং করোনা পরিস্থিতিতে গরুর দাম এবং হাট বন্ধ হওয়া নিয়ে টেনশন বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই।