ঢাকার উত্তরায় ক্রেন দূর্ঘটনায় নিহত রুবেলের মৃত্যু পর এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন
ঢাকার উত্তরায় ক্রেন দূর্ঘটনায় নিহত রুবেল হোসেনের মৃত্যু পর মেহেরপুরে তার নিজ এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। যেখানে গ্রামে শোক নেমে আসার কথা সেখানে সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের মধ্যে চলছে চরম বাক যুদ্ধ। জানা গেছে, গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকা থেকে রুবেল হোসেনের লাশ এসে পৌঁছায় সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামে। সেখানে আসেন তার প্রথম স্ত্রী দাবি করা রেহেনা খাতুন, তার সন্তান হৃদয় হোসেন, আরো এক স্ত্রী সালমা আক্তার পুতুল, আর এ স্ত্রীর মেয়ে আরোহী আক্তার নিপা। অথচ প্রথ স্ত্রী, তার সন্তান, রুবেলের পরিবারের পক্ষ থেকে আরো এক স্ত্রী ও মেয়ের কথা গোপন রাখা হয়। সকাল সাড়ে ৮ টার সময় রাজনগর দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে রুবেলে জানাযা শেষে গ্রামের কবর স্থানে তার মা বাবার পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়। পরে রুদ্ধার বৈঠক শুরু হয় প্রথম স্ত্রী দাবি করা রেহেনা খাতুন, তার সন্তান ও তৃতীয় ন্ত্রী ও আর এক স্ত্রীর মেয়ের সাথে। এ সময় মিডিয়া কর্মীদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এমনকি বার বার অন্য স্ত্রী ও মেয়ের সাথে কথা বলতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। অবশেষে পুতুল ও মেয়ে নিপা বেলা সাড়ে ১২ টার সময় জে.আর পরিবহণ ধরে ঢাকায় ফিরে যায়। এদিকে গ্রামে গ্রামে শোকের পরিবর্তে চায়ের দোকান, পাড়া-মহল্লায় রুবেলকে নিয়ে শুরু হয় নানা হাস্যরস কাহিনী। তার বউ কয়টি, ছেলে-মেয়ের সংখ্যায় বা কতো এ নিয়ে প্রতিটি স্থানে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। এমনকি লাশ দেখতে গিয়ে সাধারণ মানুষ খুজে বেড়িয়েছেন রুবেলের কয়টি স্ত্রী ও সন্তান সেখানে এসেছে। রুবেলের প্রথম স্ত্রী দাবি করা রেহেনা খাতুন জানান, তিনি ও মানিকগঞ্জের রুবেলে আর এক স্ত্রীর কথা জানে। এছাড়া তার কোন স্ত্রী নেয় বলে দাবি করেন তিনি। ঢাকার ৭ নারী স্ত্রীর দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা কোন বিয়ের কাবিন নামা দেখাতে পারেনি। শুধুমাত্র অর্থ সম্পদের লোভে কেউ স্ত্রী কেউ বা সন্তান দাবি করছেন। তবে আর এক স্ত্রী ও মেয়ে এখানে এসেছেন কিনা, কেনই বা তাদের কথা কথা গোপন রাখা হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, তাদের বিষয়ে তিনি কোন কিছুই জানেনা। কেউ ঢাকা থেকে এখানে আসেনি বলে দাবি তার। এ সময় সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপত হয় তিনি ও তার ছেলে। এ সময় কাউকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা বলে চিৎকার করেন। এ সময় ঐ বাড়ি থেকে রুবেলর আর এক স্ত্রী ও আর এক স্ত্রীর মেয়েকে বের হতে দেখা যায়। বাসে উঠতে যাওয়ার সময় কথা হয় ৩য় স্ত্রী দাবি করা পুতুলের সাথে। তিনি বলেন, ৬ বছর আগে তিনি রুবেলকে বিয়ে করেছেন। ঘর সংসার করছেন একই সাথে। কাগজপত্রও আছে তার কাছে। তার স্বামী বেঁচে থাকার সময় তার সব সময় খোজ খবরও নিয়েছেন। এখন মৃত্যুর পর তাকে অস্বীকার করা হচ্ছে। তবে তিনি নিজের অধিকার আদায়ের জন্য সব কিছু করবেন বলে জানান। এ সময় কথা হয় তার ৪র্থ স্ত্রী মেয়ে দাবি করা নিপার সাথে। তিনি বলেন, সকাল থেকে একাধীকবার মিডিয়ার সাথে কথা বলতে চেয়েছেন। অথচ কেউই তাদের সাথে কথা বলতে দেয়নি। এখন ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি। ঢাকা ফিরে নিজ অধিকার আদায়ের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি জানান। রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা কালু জানান, আগে জানতাম ঢাকায় তার এক স্ত্রী। এখন টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকায় দেখছি তার ৭ থেকে ৮ জন স্ত্রী। সন্তানদের হিসেব কেউ দিচ্ছেনা। দাফন কাজেও একাধীক স্ত্রী ও সন্তানদের দেখা গেছে। যদিও তার স্বজনদের পরিবারের সদস্যরা তা অস্বীকার করেছেন। আসলে এমন অকাল মৃত্যুতে সাধারণত গ্রাম এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। অথচ রুবেলেন ব্যাপারে উল্টো। পাড়া-মহল্লায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। তবে এলকাবাসী জানিয়েছেন, রুবেলকে ৭ জন নারী স্বামী দাবি করছে। তবে মেহেরপুরে আরো স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তিনি ২২ বছর আগে ঢাকায় চলে যান। মাঝে মাঝেই তিনি গ্রামে আসতেন। ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকুরি পাশাপাশি তিনি আদম ব্যবসা ও জমি কেনাবেচার কাজ করতেন।