টুং টাং শব্দে মুখরিত মেহেরপুরের কামার পাড়ায়
আর ক’দিন বাদেই দরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ। আগামী একুশে জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল আযহার। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নড়েচড়ে বসেছেন মেহেরপুরের কামাররা। সারা বছর অলস সময় পার করলেও কোরবানীর মৌসুমে বেশ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামার পাড়ায়।
কেউ আসছেন কোরবানী করার অন্যতম অনুসঙ্গ ধারালো ডাসা, ছুরি, বটি, হাসুয়াসহ বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করতে। আবার কেউবা আসছেন এ সব সরঞ্জাম সান দিতে। বছরের অন্য সময়ে দিনে ২-৩ শ টাকা আয় হলেও এ সময়ে প্রতিদিন আয় হচ্ছে কয়েক হাজার টাকা।
চলমান লকডাউনে হাট বাজার বন্ধ থাকায় কামারদের উপর এবার বেশি চাপ পড়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন দম ফেলারও সময় নেই কামার পাড়ার শিল্পীদের। দিনরাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলা শহরসহ উপজেলার প্রতিটি কামার ঘরে। চলতি বছরে মেহেরপুরে ১ লাখ ২৫ হাজার পশু কোরবানির লক্ষ্য মাত্র নির্ধারণ করেছে জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।
মেহেরপুর শহরের কাঁচাবাজার সংলগ্ন কামারশালার নিরঞ্জন কামার গাংনীর চোখ’কে জানান, গত বছরের চেয়ে এবার নতুন সরঞ্জাম তৈরির সংখ্যা বেশি। ছোট ছুরি ২’শ৫০ টাকা থেকে ৩শ টাকা , বড় ছুরি ৫শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, মাংস কাটার ডাসা ২ হাজার টাকা দরে বানানো হচ্ছে। এছাড়াও পুরানো বটি, ছোট ছুরি ৬০ টাকা, ডাসা ও ছুরি ১৫০ টাকা করে ধার দেয়ার খরচ নেয়া হচ্ছে। নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। যে পরিমাণ অর্ডার নেওয়া হয়েছে তাতে ঈদের আগের দিন বিকেল পর্যন্ত কাজ করা লাগবে।
গাংণী উপজেলার চর গোয়াল গ্রামের আশিরুল কামার গাংনীর চোখ’কে জানান, লোহা ও ইস্পাতের মূল্য বৃদ্ধিতে অস্ত্র বানাতে খরচ বেশি হচ্ছে। এছাড়াও কয়লার দামও বেশি। একই কথা জানালেন আমতৈল গ্রামের মুকুন্দু কামার ও মদন কামার।
মাংস কাটার ডাসা ও ছুরি বানাতে আসা সুমন হোসেন গাংনীর চোখ’কে জানান, গত বছর যে ডাসা বানানো খরচ হতো ১ হাজার সেটা বানাতে এখন খরচ হচ্ছে ২ হাজার। এছাড়াও হাট-বাজার ও গরুর হাট বন্ধ থাকায় ছুরি, ডাসার দাম কামারদের কাছে বেশি।