জীবন-জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশাকে ধরে রেখেছেন
মেহেরপুর জেলা শহরের অদুরে বামনপাড়াতে কোল সম্প্রদায়ের নারীরা বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙারি, টুকরি, ওড়া, চালুনি, মাছ রাখার খালই, ঝুড়ি ও হাঁস-মুরগির খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশাকে ধরে রেখেছেন তারা।
ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজে শামিল হন। হাটবারে স্থানীয় বাজারে ও অন্যদিন ফেরি করে এসব বাঁশের পণ্য বিক্রি করেন। সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পের মূল কাঁচামাল বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশের কারিগররা তাদের পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়ছেন এর কারিগররা। অনেকেই আবার পেশা বদল করছেন। আবার অনেকে স্বামী-স্ত্রী মিলে বাঁশ দিয়ে তৈরি করছেন নানা রকম গৃহস্থালি পণ্য।
পবি রানী ও স্বামী রঞ্জিত দাস বাঁশের কারিগর। তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে বাঁশের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে সংসারে চালাচ্ছেন। পবি রানীর বলেন, এটা আমাদের বংশগত কাজ। এ সম্প্রদায়ের প্রতিটি মেয়েই এই কাজের সঙ্গে জড়িত। তবে বর্তমানে বাঁশের তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কম থাকায় উপার্জন একটু কম হচ্ছে। মাস শেষে ৫-৬ হাজার টাকা নিজেই উপার্জন করতে পারি।
রজনি দাস বলেন,বাঁশ শিল্পের দুর্দিনে হাতেগোনা কিছুসংখ্যক পরিবার এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও, পূর্বপুরুষের এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি।
দাস সম্প্রদায়ের প্রধান মাধব চন্দ্র দাস বলেন, সময়ের বিবর্তনে আমাদের পন্যের চাহিদা কমেছে। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে কারিগররা বাঁশ সংগ্রহ করে। বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি না হলেও সময় মত লোন পরিশোধ করতে হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা থাকলে হয়তো আমরা ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে পারবো।
আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম জানান, বামনপাড়ার দাস পল্লিতে বসবাসরত সদস্যরা অন্যান্যদের মত বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধাব ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্দীরের পাকাকরণের ভিত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছে। ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।