গাংনী; ভায়ের শত্রু যখন ভাই!
জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোটভাই ইজাজুল তার অন্য তিনভাই ইকরামুল, জহুরুল ও হাফিজুলের পাঁচ বিঘা জমির সবজিসহ অন্যান্য ফসল বিনষ্ট করেছে। রাতের আঁধারে আগাছা নাশক প্রয়োগ করে এ ফসল ক্ষেত নিষ্ট করেছে বলে দাবি করেছেন অন্য তিনভাই। বিগত চার বছর যাবত এমনভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে বলেও দাবী করেছেন তারা। ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনীর ধানখোলা গ্রামের।
ইকরামুল হক জানান, তার পিতা আছালত শেখ ১৯৮৬ সালে তার চার ছেলে ইকরামুল, জহুরুল ইজাজুল ও হাফিজুলের নামে ৮১ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। কিন্তু কাগজপত্রে আছালত শেখ পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত জমির মাত্র ৫৫ শতকের দাবীদার। এ নিয়ে আছালতের ছেলেরা অন্যান্য শরীকদের সাথে সালিশ বৈঠক করে বিষয়টি মিমাংসা করেন। সেই সাথে ইকরামুল, জহুরুল ও হাফিজুল অন্যান্য শরীকদের কাছ থেকে লীজ নিয়ে ৮৪ শতক জমি আবাদ করতে থাকেন।
এ দিকে সুচতুর ছোটভাই ইজাজুল ২০০৫ সালে তার পিতা আছালত শেখকে ভুল বুঝিয়ে জমি জিরাত না থাকা সত্বেও বিভিন্ন খতিয়ান ও দাগ নম্বরে ৮৪ শতক জমি রেজিস্ট্রি করেন এবং স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে খারিজও করে নেন। একই ভাবে ২০২২ সালে আবারো ভুয়া ভাবে ৭০ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেন।
ভুয়া জমি ও ভুয়া খারিজের মাধ্যমে জমির মালিক দাবি করে ইজাজুল গেল চার বছর ধরে একের পর এক ফসল নষ্ট করে চলেছে। চলতি মৌসুমে দেড় বিঘা জমির মরিচ, দুবিঘা জমির রাই সরিষা, দুবিঘা জমির কলাইসহ অন্ততঃ ১০ লাখ টাকার ফসল বিনষ্ট করেছে বলেও দাবী করেছেন ইকরামুল, জহুরুল ও হাফিজুল। কোন প্রতিবাদ করলে প্রাণ নাশের হুমকী ও মামলার ভয় দেখান ইজাজুল।
স্থানীয়রা জানান, ইজাজুল দুষ্টু প্রকৃতির লোক। সে নানা সময়ে নানা ভাবে মানুষ জনকে হয়রানী করে। গ্রামের লোকজন আরো জানান, শাবান আলীর তিন একর ৭০ শতক জমির মধ্যে পৈত্রিক সুত্রে আছালত শেখ ৫৫ শতকের দাবীদার। অথচ তার ছেলে ইকরামুল, জহুরুল ইজাজুল ও হাফিজুলের নামে ৮১ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। এতেই বাধে বিপত্তি। শুধু তাই নয়, ২০০৫ সালে ৮৪ শতক ও ২০২২ সালে ৭০ শতক জমি ছেলে ইজাজুলের নামে অন্যের জমি ভুয়া ভাবে রেজিস্ট্রি করেন। শুধু তাই নয়, জয়নাল আবেদিন নামের এক প্রতিবেশির বাড়ির জমিও রেজিস্ট্রি করেন ইজাজুল। বিষয়টি ধরা পড়ার পর গ্রাম্য সালিশে ইজাজুলকে চার লাখ ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপুরুন দিতে হয়।
ইকরামুল ও তার ভাই জহুরুল ও হাফিজুল জানান, পারিবারিকভাবে ও ইউনিয়ন পরিষদে বসে জমির বিলি বন্টন করে নেয়ার বিষয়ে অনেকবার বলা হলেও ভাই ইজাজুল তা করেনি। ভুয়া কাগজপত্র করে জমির দখল নিতে চাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ করেও কোন কাজ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইকরামুল ও তার দুইভাই।
এদিকে ইজাজুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ইজাজুলের স্ত্রীও এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ।