গাংনী পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে ১ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ শুরু
মেহেরপুরের গাংনীতে পৌর নির্বাচন শুরু হতে এখন বেশ কিছুদিন বাকি থাকলেও মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা নির্বচানে অংশ নেওয়ার বার্তা এখন থেকেই জানান দিচ্ছেন। তারা সকলেই জনগণের খেদমত করার ব্রত নিয়ে ভোট যুদ্ধে নামবেন বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফেসটুন ব্যানার পোষ্টারও চোখে পড়ছে শহরের ওলি গলিতে। সকলেই এখন থেকে জনগনকে কাছে ডাকছেন সবাইকে আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছেন।
এদিকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২জন মেয়র পদে ভোট করবেন বলে নাম শোনা গেলেও মাত্র ৪জন নেতা বেশ জোরেশোরেই জনমত সৃষ্টি করার লক্ষে কর্মকান্ড শুরু করে দিয়েছেন।এদের মধ্যে বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম, সাবেক মেয়র আহম্মেদ আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু এবং সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধ মোঃ মকবুল হোসেন এর একান্ত সহকারি,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহিদুজ্জামান শিপু।উল্লেখিত ৪জন সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভিতর স্থানীয়দের জনগনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে তরুণ প্রজন্মের নেতা খ্যাত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহিদুজ্জামান শিপু।
ইতোমধ্যে তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভোটারদের আমন্ত্রণে সেখানে তাদের সাথে মতবিনিময় করতে দেখা গেছে। এছাড়াও তার কার্যালয়ে লোকজনের ভিড় লক্ষ করা গেছে।এদিকে সাবেক মেয়র আহম্মেদ আলির কার্যালয়ে প্রতিদিনই স্থানীয়দের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। তিনিও জনগনের কাছে ছুটে চলছেন আগের মতো আবারও তিনি নির্বাচিত হবেন বলে তিনি আশা করছেন।গতবারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মেয়র আশরাফুল ইসলামও তার নিজেস্ব কার্যালয়ে জনগণকে আহবান করছেন তাবে গতবার জনগণের যেমন সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে এবার এখন পর্যন্ত তেমনটি লক্ষ কার যায়নি।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবুর নিজেস্ব কার্যালয়েও লোকজন দেখা গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লক্ষ করা গেছে।
এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ মোশাররফ হোসেন ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক প্যানেল মেয়র নবিরুদ্দিন আগামী পৌর নির্বাচনী যুদ্ধে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোন সরব প্রচার প্রচারণা না থাকলেও স্থানীয় জনগণের সাথে তারা মতবিনিময় চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রায় ১২জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে ৬জনই আওয়ামী লীগ ও বাকি ৬জনের মধ্যে বিএনপি’র ৪জন, এনডিএম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে ১জন করে নাম শোনা যাচ্ছে।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপি থেকে এখন পর্যন্ত যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে গতবারে ধানের শীষে অংশ নেওয়া সাবেক প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর ইন্সারুল হক ইন্সু, উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মেঘলা,উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ। তবে বিএনপি নেতাদের নির্দিষ্ট কোন কার্যালয়ে বসে প্রচার প্রচারণা করতে খো যায়নি।
এব্যাপারে একাধিক নেতাদের মুখ থেকে শোনা গেছে যে বর্তমান ক্ষমতাশীন সরকার যেভাবে বিরোধী মতকে দমন পিড়ন শুরু করে চলেছে তাতে ভোট সুষ্ঠভাবে হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। যে কারণে সতুষ্ফুর্তভাবে এখনও বিএনপি থেকে কেউ প্রচারণা চালাচ্ছেনা তবে জনগণের সাথে সব সময় যে কোন মাধ্যমে হোক খোঁজখবর ও মতবিনিময় চালানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সকল নেতারাই মনোনয়ন না পেলে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান তবে বর্তমান মেয়র আশরাফুল ইসলাম মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে অত্যান্ত আশাবাদি তবে না পেলে তিনি ভোটে অংশ গ্রহন করবেনা কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘সেটা সময় বলে দেবে।’ উল্লেখ্য, গতবার তিনি নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নেন এবং জয় লাভ করেন।
এদিকে বিএনপি’র নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের দল যাকেই ধানের শীষ প্রতীক দেবে তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট করবে এবং ভোট যদি সুষ্ঠভাবে হয় তাহলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি বলে মন্তব্য করেন।এবারের গাংনী পৌর নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম থেকে এখন পর্যন্ত কারোর নাম শোনা যাচ্ছেনা। এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা জামায়াত ইসলামী’র আমীর নাজমুল হুদার সাথে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন নির্বাচনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি এমনকি এ নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনাও হয়নি।
এবারের পৌর ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এখন পর্যন্ত একজনের নাম শোনা যাচ্ছে তিনি গাংনীর প্রথম নির্বাচিত মেয়র আমিরুল ইসলামের জামাতা ও বাজার কমিটির সভাপতি মোহাঃ মহাবুবুর রহমান স্বপন। তিনি ইতোমধ্যে জনগনের সাথে মতবিনিময় শুরু করে দিয়েছেন।এদিকে ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) থেকে প্রার্থীতার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্র থেকে স্থানীয় ভোটে অংশ গ্রহন করার তেমন কোন নির্দেশনা নেই তবে যদি কেউ ভোটে অংশ গ্রহন করতে চাই তাহলে অংশ নিতে পারে।
সেক্ষেত্রে গাংনী পৌরসভায় উপজেলা এনডিএম এর সদস্য সচিব মহিদুল ইসলাম উজ্জল এবার ভোটে অংশ গ্রহন করতে পারে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির নেতা কমরেড আব্দুল মাবুদ তার দল থেকে এবার পৌর ভোটে অংশ নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন পর্যন্ত দল থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।