গাংনী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সার কেলেংকারী সহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ
মেহেরপুরের গাংনী কৃষি অফিসার ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে সার ও অর্থ কেলেংকারী সহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কৃষি কর্মকর্তার দূর্নীতি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সাব ডিলার ও এলাকাবাসির। প্রথমবারের মত উপজেলা কৃষি অফিসার হিসেবে পদায়ন পেয়েই বেপোরয়া হয়েছে উঠেছেন তিনি।
কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন ২৩ সালের শুরুতে গাংনীতে যোগদানের পর থেকে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী ও ডিলাদের জিম্মি করে কোটি টাকার অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার কারনে তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছেনা।
জানা গেছে, চলতি মাসে গাংনী উপজেলায় ১২ জন ডিলারের জন্য ৯শত ৮৪ মেট্রিকটন সার বরাদ্দ দেয়া হয়।
বরাদ্দকৃত সারের মধ্যে এমওপি ৩৫০ মে:টন,টিএসপি ৩৩৭.৮ মে:টন ও ডিএপি ২৯৫.৮মে:টন। প্রতিজন ডিলারের বরাদ্দ ৮২ টন সার।
এরমধ্যে হতে এক ইউপিতে ৯ জন সাব ডিলার ৯.১১ মে:টন বরাদ্দ পাওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ২.৪ মে:টন এমওপি,টিএসপি ও ডিএপি সার বরাদ্দ দিয়েছে কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন। বাকী সার মোটা অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন।
এদিকে কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সার নীতিমালা ২০০৯ লঙ্ঘন করে লাইসেন্স ও কর্তৃত্বপত্র বিহীন যত্রতত্র খোলা বাজারে নিম্নমানের সার ও কিটনাশক বিক্রিতে সহায়তা করছেন।
চেংগাড়া গ্রামের সাব ডিলার আবুল কালাম আজাদ জানান,ডিলার নিয়োগের পর থেকে অদ্যবদি বাংলা টিএসপি সার বরাদ্দ থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। ১৩শত ২৫ টাকার পরিবর্তে ১৮ থেকে ২ হাজার টাকা দিলে মুল ডিলারের কাছে সার পাওয়া যায়। ষোলটাকা গ্রামের সাব ডিলার গোলাম মোস্তফা বলেন,বাংলা টিএসপি কোন দিনও দেয়া হয়নি।
ষোলটাকা ইউপি সার ডিলার শহিদুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে রায়পুর ইউপির সার ডিলার এফএমজি মার্কেটিংয়ের মালিক আব্দুল মান্নান আমেরিকা প্রবাসী হলেও তার নামে প্রতিমাসে সার উত্তোলন করা হয়। এই সার উত্তোলনে কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
চাষীরা জানান,প্রায় প্রতিটা ডিলার নামমাত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ছোট একটি গোডাউন ভাড়ায় দেখালেও ব্যবসা পরিচালণা করেন গাংনী কিংবা বামন্দী বাজারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন,২০২৩/২৪ অর্থ বছরের প্রনোদনার বিভিন্ন সার বীজ না দিয়ে ভুয়া তালিকা তৈরি কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তার নানা অনিয়ম দূর্নীতি ও অনিয়ম রয়েছে মুখ খুললে বদলী করে দেওয়ার ভয় দেখায়। একারনে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না।
এদিকে ভেজাল কিটনাশক ও খোলা বাজারে সার বিক্রি বন্ধে কৃষক ও একাধিক কিটনাশক কোম্পানী লিখিত অভিযোগ দিলে কর্নপাত করেনি কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন।
এছাড়া ভেজাল পন্য বিক্রির দায়ের ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক লাইসেন্স বাতিল হলেও কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনকে ম্যানেজ করেই বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি গ্রহন (রিসিভ) করেননি।