গাংনীর সীমান্ত গ্রামগুলোতে আবারও ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:59 PM, 27 October 2020

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম তেঁতুলবাড়ীয়া, মথুরাপুর, সহড়াতলা, রংমহল, খাসমহল, করমদীসহ একাধিক গ্রামে প্রতিবছরের ন্যায় আবারও অ্যানথ্যাক্স ছড়িয়ে পড়েছে।

গরু-ছাগলসহ অনেকেই অ্যানথ্যাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই ৮/১০ টি গরু-ছাগল আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছে। অসুস্থ হওয়ার কারনে অনেকে গরু ছাগল জবাই করে মাংস খাওয়ার কারণে অ্যানথ্যাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন নিচ্ছে। আবার অনেকে অসুস্থ গরু ছাগল কম মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছে। ফলে পশুপালনকারীরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। প্রাণীসম্পদ বিভাগের উদাসীনতার কারনে অনেকেই অ্যানথ্যাক্সে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

পশুপালনকারী আব্দুল বারী জানান, আমি গরীব মানুষ। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে গরু ক্রয় করে সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করে লাভের আশায় গরু পালন করেছিলাম। কিন্তু সেই আশা ভেঙ্গে গেল। এখন আমি কি দিয়ে ঋণ শোধ করবো। এমনিভাবে অনেকেই তাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে। এখন তারা বিপাকে পড়েছে।

তেঁতুলবাড়ীয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহের মধ্যেই মৃত আবুলের ছেলে আব্দুল বারী, দুলবাসের ছেলে ইসমাইল হোসেন, মৃত কছের মন্ডলের ছেলে ফুলবাস, ও আসাদুলের বেশ মোটাতাজা ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মূল্যের কয়েকটি গরু হঠাৎ কাপুনী দিয়ে মাটিতে পড়ে মারা গেছে।

একইভাবে উক্ত গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে বিল্লাল হোসেন, সাত্তারের ছেলে হাবিব, মৃত কছের আলীর ছেলে ফুলবাস, আনসার আলী, রহিদুল ইসলাম, মিশকাত আলীর ছেলে নাজিমউদ্দীন রোগাক্রান্ত অসুস্থ গরু-ছাগল জবাই করে মাংস বিক্রি করে। ঐ মাংস যারা নাড়াচাড়া করেছে এবং খেয়েছে তারাই অ্যানথ্যাক্স আক্রান্ত হয়ে হাতে পায়ে ক্ষত ঘা’এর সুষ্টি হয়েছে।

আরও জানা গেছে, আরিফ, সিরাজের মেয়ে বিউটি খাতুন, আনসার আলী (বর্তমানে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন), মৃত আজিবারের ছেলে হযরত আলী, আনসারের মেয়ে পলি খাতুন,ইলিয়াসের স্ত্রী মীম, হযরতের ছেলে লিটন ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি অ্যানথ্যাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকতার ডা. রিয়াজুল আলম জানান, হাসপাতালে মাঝে মধ্যেই দুএকজন অ্যানথ্রাক্স আক্ত্রান্ত রোগী আসছে। আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আর সীমান্ত গ্রামগুলোতে আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীদের পাঠানো হবে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতার্ মোস্তফা জামান জানান, আমরা ইউনিয়ন কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি।অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে গরু ছাগলের ভ্যাকসিন দেয়া হবে। অসুস্থ গরু ছাগল জবাই না করা এবং মাংশ না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, মাসিক সমন্বয় সভায় উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মাইকিং এর মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে এবং প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরকে মনিটরিং করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :