“গাংনীর লাখো মানুষের কন্ঠস্বর এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন”

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:22 PM, 11 March 2022

কিছু মানুষ সমাজে এবং রাজনীতিতে অপরিহার্য হয়ে ওঠেন নিজ যোগ্যতায়। পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, বিত্ত-বৈভবের প্রাচুর্য কিংবা কারো আশির্বাদে নয় বরং বন্ধুর পথে ক্লান্তিহীন নিরন্তর সংগ্রামের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সমাজ এবং রাজনীতিতে চালকের আসনে আসীন হন। এমন একজন সফল রাজনীতিকের নাম মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন। ৭৪ মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের জনপ্রিয় সাংসদ তিনি। ১৯৬৮ সাল, বঙ্গবন্ধুর নামে পাকিস্তানি শাসকের দায়েরকৃত ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র’ মামলার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে যখন সমগ্র পূর্ববাংলা উত্তাল। এমনই সময়ে ১৫ ই জুন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফুটফুটে এক পুত্র শিশু। পিতামাতা নাম রাখেন মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন।

সংগ্রামের উত্তাল ঢেউয়ে জন্ম নেওয়া খোকন যেন মায়ের কোল থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হন। লেখাপড়ার জন্য ঢাকার স্কুলে ভর্তি হওয়া কিশোর খোকন জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। ৭৫ পরবর্তী অবৈধ সামরিক শাসনবিরোধী সংগ্রামের বন্ধুর পথ বেছে নেন মেধাবী স্কুল ছাত্র খোকন। ১৯৮৩ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে শামিল হন ছাত্রলীগের পতাকাতলে। অবৈধ সামরিক শাসক জেনারেল জিয়ার ধারাবাহিকতায় জেনারেল এরশাদের গণতন্ত্র নিধনের সুনিপুণ কর্মযজ্ঞ যখন দূর্বার গতিতে চলমান। রুঁখে দাঁড়ায় বাংলার ছাত্রসমাজ। অবৈধ শাসকের ঘোষিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ১৯৮৪ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগ ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

ছাত্রদের মিছিলের উপর চলন্ত ট্রাক উঠিয়ে দেয় অবৈধ সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ। ট্রাক চাপায় রাজপথে জীবন দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র সেলিম এবং দেলোয়ার। সেলিম, দেলোয়ারের বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারির সেই রক্তাক্ত মিছিলের তরুণ সাথী স্কুল ছাত্র সাহিদুজ্জামান খোকনকে নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় গাংনীর রাজনীতিতে। পরবর্তীতে

‘সেলিম, দেলোয়ার, তিতাস;
আন্দোলনের লাল পলাশ’

স্লোগানে রাজপথ কাঁপানো তরুণ খোকন ১৯৮৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৮৬’র জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী নূরুল হকের বিজয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

সরকার ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ফ্রিডম পার্টির ক্যাডারদের তখন প্রচন্ড দাপট। চারদিকে অস্ত্রের ঝনঝনানি। বঙ্গবন্ধুর স্বঘোষিত খুনি মেজর বজলুল হুদার গুন্ডা বাহিনীর সাথে লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় গাংনীর আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দকে। ১৯৮৮ সালের ১৫ ই আগস্ট ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন সাহিদুজ্জামান খোকন সহ আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু দমে যান নি। সাহিদুজ্জামান খোকন ফ্রিডম পার্টির বিরুদ্ধে, এরশাদের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলনে সবসময় ছিলেন সোচ্চার।

৮০’র দশকের শেষ ভাগে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা মকবুল হোসেন। গাংনীর আওয়ামীলীগ আন্দোলন সংগ্রামে আরো শক্তিশালী হয় তার যোগদানের মধ্য দিয়ে। ৯০’র গণঅভ্যুত্থানে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের পতন হয়। ৯০’র এরশাদ পতনের চূড়ান্ত গণঅভ্যুত্থানে গাংনীর রাজপথের অন্যতম প্রধান সাহসি সংগঠক ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক সাহিদুজ্জামান খোকন। এরশাদের পতনের পর ৯১-৯৪ পর্যন্ত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচনের প্রতিবাদে গাংনীর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ঐ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তৎকালীন জনপ্রিয় ছাত্রনেতা সাবেক ভিপি ও জিএস ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, মকবুল হোসেন, এম এ খালেক, এ্যাড শফিকুল ইসলাম, গোলাম রহমান কালু, গোলাম সরোয়ার, ৯০ দশকের শুরুতে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া জনপ্রিয় নেতা আহমেদ আলী, কামরুজ্জামান বুড়ো, সোহেল আহমেদ, গোলাম সাকলায়েন ছেপু, শফি কামাল পলাশ সহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দ।

নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় অল্প বয়সেই উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পান সাহিদুজ্জামান খোকন। উপজেলা আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যখনই দলের যে দায়িত্ব পেয়েছেন, তিনি তা পালন করেছেন নিষ্ঠার সাথে। সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন বারবার। এ কারনে কর্মিবান্ধব, সদা হাস্যজ্জ্বল, সদালাপী ও বিনয়ী সাহিদুজ্জামানকে কর্মিরা পছন্দ করেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতার কারনেই ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা পরবর্তী আওয়ামীলীগের চরম দুঃসময়ে ৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে আওয়ামীলীগের মত উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট গাংনী উপজেলার পতাকা অর্পিত হয় তার কাঁধে।

কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচিত হয় ঐ কাউন্সিলে। দলের দুই প্রবীণ হেভিওয়েট প্রার্থী চেয়ারম্যান আব্বাস আলী বিশ্বাস এবং বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ারকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। কাউন্সিলরগণ দলের দুঃসময়ের দুই প্রবীণ পরীক্ষিত কান্ডারীর পরিবর্তে বেছে নেন ৩৬ বছরের সুদর্শন যুবনেতা এবং সাবেক ছাত্রনেতা সাহিদুজ্জামানকে। সভাপতি নির্বাচিত হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করেন।

বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গাংনীর রাজপথে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলেন। তার সাহসি নেতৃত্বে খালেদা-নিজামী বিরোধী আন্দোলনে গাংনীর রাজপথে আওয়ামীলীগ ছিল দোর্দণ্ড প্রতাপশালী। ২০০১-২০০৬ গাংনীর রাজপথ ছিল আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীদের দখলে। আওয়ামীলীগ চারদলীয় জোট সরকারের অত্যাচার, নির্যাতনের স্টীম রোলার মোকাবিলা করেও বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিরোধ করেছে রাজপথে। ১/১১ এর তুমুল প্রতাপশালী সরকারের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা কারামুক্তি আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাহিদুজ্জামান খোকন।

গাংনীর গণমানুষের প্রিয় নেতা ৯৬’র পার্লামেন্টের স্বতন্ত্র সাংসদ আওয়ামীলীগ নেতা মকবুল হোসেন, আওয়ামীলীগের সফল সংগঠক এম এ খালেক, চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার, চেয়ারম্যান গোলাম রহমান কালু, চেয়ারম্যান আব্বাস আলী বিশ্বাস, এ্যাডভোকেট শফিকুল আলম, আহমেদ আলী, ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, নজরুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, সোহেল আহমেদ, নাজমুল হুদা বিশ্বাস, গোলাম সাকলায়েন ছেপু, শফি কামাল পলাশ, রাহিবুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ সহ শত শত নেতাকর্মী খালেদা-নিজামী জোট সরকার এবং ১/১১ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পতন হয় বিএনপি সরকারের। নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় ওয়ান-ইলেভেন সরকার।

বাতিল হয়ে যাওয়া ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুল খালেক এবং মকবুল হোসেন এর মধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রশ্নে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে বিপুল জনসমর্থন থাকার পরেও আওয়ামীলীগ প্রার্থী মকবুল হোসেন সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে যান ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। একই কারনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি বর্জনের পরেও আওয়ামীলীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল খালেক হেরে যান দলের স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন এর কাছে। অবশেষে বহু বছর পর দলের প্রার্থীদের ধারাবাহিক পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের করে আনেন সাহিদুজ্জামান খোকন।

১৯৮৬ সালের পর প্রথম ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনেন প্রথমবারের মত নৌকার কান্ডারী হয়ে। দলের মনোনয়ন পেয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে থাকা মান, অভিমান দূর করে সবাইকে নিয়ে আসেন এক প্লাটফর্মে। তার সাংগঠনিক দক্ষতায় আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে নৌকার প্রার্থী হিসেবে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীকে। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী এম এ খালেক এবং আহমেদ আলি কে বিজয়ী করতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গাংনীবাসী নির্বাচনের পর থেকে এর সুফল পাচ্ছেন। একসাথে গাংনীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি।

অবহেলিত গাংনীবাসীর ভাগ্যের উন্নয়নে গাংনীর লাখো মানুষের পক্ষে সংসদে এমপি খোকনের কন্ঠস্বর থাকে উচ্চকিত। একের পর এক উন্নয়ন বরাদ্দ নিয়ে আসছেন গাংনীর মানুষের জন্য। সোয়া তিন বছরে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমগ্র উপজেলায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। অসংখ্য রাস্তাঘাট নির্মিত হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে অনেক সড়ক। অনেক সড়কের সংস্কার কাজ চলমান। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। ছেউটিয়া নদী খনন করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। গাংনীর উপজেলার প্রায় ৫০ টি বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ এবং বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো কোনোটিতে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বেতবাড়িয়াতে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মাথা ভাঙা নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে আগামি জুন মাসে। সীমান্ত এলাকাবর্তী কৃষি নির্ভর অবহেলিত গাংনীবাসীর জন্য তিনি একাধিক পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজ, ভেটেরিনারী স্কুল এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদে জোরালোভাবে একাধিকবার দাবি তুলেছেন। গাংনীবাসীর জীবনমান উন্নয়নে এসব দাবি বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে দাবি করেন। অচিরেই এসব দাবি বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলে গাংনীতে যেমন বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠবে
তেমনি কৃষিনির্ভর গাংনীবাসীর কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে।

সাংসদ সাহিদুজ্জামান খোকনের অনবদ্য সৃষ্টি ‘শেখ হাসিনা কৃষক ছাউনী’। ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত কিংবা তীব্র তাপদাহে কৃষকের বিশ্রামের জন্য ফসলের মাঠের মধ্যে যাত্রী ছাউনীর আদলে তিনি নির্মাণ করেছেন দৃষ্টিনন্দন কৃষক ছাউনী। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সারাদেশে প্রশংসিত হয়েছে। গাংনীবাসীর জন্য এরকম আরো অনেক জনকল্যাণমূলক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করতে চান এমপি খোকন। চান দল ও জনগণের ধারাবাহিক সমর্থন।

সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর শত শত অসুস্থ অসহায় রোগী এবং অসংখ্য দরিদ্র শিক্ষার্থীকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল দলের দূর্দিনের অসংখ্য নিবেদিতপ্রাণ অসুস্থ নেতাকর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসার জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করেছেন। দলের শয্যাশায়ী প্রবীণ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নেন এমপি খোকন। বিভিন্ন ঈদের সময় ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদবস্ত্র বিতরণ করেছেন। শীত মৌসুমে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চাদর বিতরণ করেছেন। দলীয় নেতাকর্মীসহ শত শত মানুষের বাড়িতে সোলার প্যানেল বসিয়ে দিয়েছেন ব্যক্তি উদ্যোগে।

করোনা মহামারীতে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন। করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। করোনা মহামারিতে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চা দোকানি, ভ্যান, রিক্সা, অটো, বাস এবং ট্রাক শ্রমিক সহ সমাজের হতদরিদ্র হাজার হাজার মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করেছেন। মানুষের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেছেন। জীবনের মায়া ত্যাগ করে মানুষের জন্য স্বপরিবারে কাজ করেছেন।

তার সহধর্মিনী আওয়ামীলীগ নেত্রী লায়লা আরজুমান বানু (শিলা) সর্বক্ষণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। মেধাবী দুই পুত্র সন্তান ও সকল মানবিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় আছেন। মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন, তার সহধর্মিনী লায়লা আরজুমান বানু এবং পুত্র ও কন্যা সন্তান সহ পরিবারের ৬ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সেবামূলক এবং মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেকে ‘মানবিক সাংসদ’ হিসেবে ইতিমধ্যে গণমানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন।

২০০৪ সাল থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন। বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হলে ও ১৮ বছরে সম্মেলন হয়নি। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এম এ খালেক অর্ধযুগের ও বেশি সময় পূর্বে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে জেলার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক দিয়ে দীর্ঘবছর চলছে সংগঠন। ফলে দীর্ঘদিনের পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে যেমন ক্ষোভ আছে, তেমনি আছে হতাশা। তবে আগামি ২০ মার্চ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন উপলক্ষে পুরো উপজেলায় এখন সাজ সাজ রব। নেতাকর্মীদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। অতীতের মত কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি ও নেই। সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশীরা যে যার মত লবিং করছেন, তৃণমূলের কর্মিদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন।

এবারের কাউন্সিলেও শক্তিশালী সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন। মেহেরপুর-২ আসনের এই সাংসদের রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। ৩৯ বছরের রাজনৈতিক জীবনে গাংনীর আনাচে কানাচে মুজিব আদর্শের রাজনীতিকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে তার রয়েছে অপরিসীম ত্যাগের ইতিহাস। ২৬-২৭ টি মামলার আসামি হয়েছেন রাজনৈতিক জীবনে। ৭ বার কারাবরণ করেছেন। হত্যা মামলা, জননিরাপত্তা আইনের মামলা এমনকি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামী হয়েছেন আইনে সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী সজ্জন ও পরিচ্ছন্ন এই রাজনীতিক। মোকাবিলা করেছেন রাজপথে এবং একই সাথে আদালতে। হামলা, মামলার শিকার দলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন দুঃসময়ে। আসন্ন কাউন্সিল অধিবেশনে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের সমর্থনের পাল্লা তার দিকেই ভারি বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস তার।

অত্যন্ত সাদামাটা জীবনের অধিকারী এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন। ক্ষমতার দাপট দেখান না, নেই কোন অহংকার। একজন ডাক্তার তার অমায়িক ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন এভাবে-
“ক্ষমতাসীন দলের একটি উপজেলার সভাপতি এবং একাদশ জাতীয় সংসদের একজন এমপি আমার নিয়মিত রোগী। অথচ আমি এতদিন জানতেই পারি নি। নিয়মমাফিক আমাকে দেখানোর জন্য সিরিয়াল দেন এবং সিরিয়াল মেইনটেন করেই আমাকে দেখান। অথচ কোনোদিন নিজের পরিচয় পর্যন্ত দেন না! একজন প্রভাবশালী নেতা এবং সাংসদের এই বিনয় সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছে।”
একজন নেতার পক্ষে একজন ডাক্তারের এ ধরনের মন্তব্যই তার জাত চিনিয়ে দেয়।

সাংসদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, “আওয়ামীলীগ আমার রক্তে মিশে আছে। আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে গাংনীর মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।” এজন্য দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গাংনীর সর্বস্তরের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন চান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :