গাংনীতে মাল্টা চাষের দিকে ঝুকছে কৃষক
মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া বারি মাল্টা-১এর ৫০টি চারা তার ১২কাঠা জমির পটল ক্ষেতের মধ্যে রোপন করেন।পরিচর্যার দেড় বছরের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু করে।বেশ সফলতার মুখ দেখছেন ইসমাইল হোসেনসহ অনেক কৃষক।
গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামের মঈনুল ইসলাম কাজল চাকুরীর সুবাদে দেখা হয় মোনাখালী গ্রামের মাল্টা চাষীর সাথে।মাল্টা চাষে সফলতার কথা শুনে অধিক লাভ দেখে তাদের মাধ্যমে চারা সংগ্রহ করে গত বছর কাজল ১২ কাঠা জমিতে মাল্টা-চায়না কমলা চাষ শুরু করেন।এবছর তার মাল্টা গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে।কাজল বলেন,এবছর নতুন করে গাছে কমলা ধরা শুরু হয়েছে। চায়না কমলা চাষে তার যা খরচ হয়েছে সব খরচ উঠে আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
গাংনী শহরের একজন পেয়ারা চাষী আজিজুল হক রানু পেয়ারা চাষের পাশা পাশি ১একর জমিতে প্রথম বারের মতো মাল্টা চাষ শুরু করেছেন।জানা গেছে গাংনী উপজেলার মালশাদহ ও হাড়িয়াদহ রাস্তার পাশে এই মাল্টা চাষ শুরু করেন।মাল্টা চাষী আজিজুল হক রানু বলেন,আমি প্রথমে মাল্টা চাষীর সাথে কথা বলে গত বছর থেকে এই চাষ শুরু করেছি।চায়না ৩- ও বারী ১ চারা রোপন করেছি।পেয়ারা চাষের থেকে অনেক বেশি লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে,জেলায় অন্ততঃ ৮০হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ করা হচ্ছে।২০১৩ সালে প্রথম মালটা চাষ শুরু হয় এ জেলাতে।
কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, মাল্টা এলাকার লোকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এতে খরচ কম অথচ লাভ বেশী।মাল্টার জমিতে সাথী ফসল হিসেবে দুই বছর অন্য ফসলের আবাদ করা সম্ভব।অধিক লাভবান হওয়ায় অনেক বেকার যুবক এগিয়ে আসছেন মাল্টা চাষে।দুই বছরের মাথায় গাছে ধরে ফল।ঐ বছরে ৬০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন তিনি।
একই অবস্থা ঐ উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের চাষি মাহাবুল হক।অধিক লাভ দেখে তাদের সাথে চারা সংগ্রহ করে শুরু করেছেন মাল্টা চাষ।গাংনী উপজেলায় নতুন করে প্রায় ২৫একর জমিতে মাল্টার বাগান হয়েছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে.এম.শাহাবু্িদ্দন আহমেদ বলেন,গত কয়েক বছরে বেড়েছে মাল্টার বাগান। বারি মাল্টা-১ চাষের জন্য উপযোগি এখানকার মাটি।মাল্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই,দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে এ ফলটি।
মজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী মেহেরপুরের মাটি।এখন পর্যন্ত মাল্টা চাষে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি।তবে ফল আসার সময় পোকার আক্রমন দেখা দেয়।কীটনাশক ও সেক্সফেরোমন ট্রাপ ব্যবহার করে চাষিরা সফলতাও পাচ্ছেন। স্বাদেও অতুলনীয় এখানকার মাল্টা ।
কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. আক্তারুজ্জামান জানান, সিলেটের সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভাবন করেছে বারি মাল্টা-১ জাতের।এটি বাংলাদেশের সব এলাকায় চাষ করা সম্ভব।কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে আমদানি নয়, মাল্টা চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।