গাংনীতে বৃষ্টি প্রার্থনাই বিশেষ মোনাজাত
সারা দেশে তীব্র দাবদাহের প্রভাবে দিশেহারা জনজীবন। মেহেরপুর জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় বৃষ্টি কামনায় মেহেরপুরের গাংনীতে ইস্তিস্কার (পানির জন্য প্রার্থনা) নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক ফুটবল মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় মুসল্লিরা এ নামাজে অংশ নেন। চলমান অতি তীব্র দাবদাহের প্রভাবে দিশেহারা মানুষ সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভের জন্য এ সময় দুহাত তুলে কান্নাকাটিও করেন।
দুই রাকাত নামাজের আগে নসিহতপূর্ণ বক্তব্য দেয়া হয়। পরে দুই রাকাত নামাজে ইস্তিস্কা আদায় করেন মুসল্লিরা। নামাজ শেষে আল্লাহতালার দরবারে দুই হাত তুলে মোনাজাত ও কান্নাকাটি করেন তারা।
নামাজে অংশ নেয়া স্থানীয় শ্রমিক নেতা আবুল বাশার জানান, দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখিসহ সবাই খুব কষ্টে আছে। এজন্য তারা বৃষ্টির আশায় নামাজ পড়েছেন। এমন কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি উচ্চস্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, পিতার কাছে জায়গা না পেলে মানুষ মায়ের কাছে যায়। তবে তোমার কাছে জায়গা না পেলে আমরা আর কার কাছে যাবো। আমাদের তো আর অন্য কোন মালিক নাই। ছোট ছোট নিষ্পাপ শিশু ও পশু পাখির কথা চিন্তা করে তুমি পানির ব্যবস্থা করে দাও প্রভু।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ খালেক জানান, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের পাপের জন্য তওবা এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি উঠছে না। হিট স্ট্রোকে কয়েকজন ব্যক্তি মারাও গেছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টির পানির ভীষণ প্রয়োজন। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টির পানি চেয়ে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় ও মোনাজাত করা হয়েছে।
গাংনী ভিটাপাড়া জামে মসজিদের ইমাম, খালিদ সাইফ উল্লাহ এর ইমামতিতে ইস্তিস্কার দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
নামাজ শেষে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের নিয়ে সৃষ্টিকর্তার দরবারে দু’হাত তুলে মোনাজাত পরিচালনা করেন গাংনী দারুচ্ছালাম বাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ রুহুল আমিন। এ সময় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা ও সব মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয়।
নামাজ শেষে ইমাম খালিদ সাইফ উল্লাহ বলেন, বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সাহাবীদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করতেন। সেজন্য অনাবৃষ্টি ও অতি তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এ অবস্থায় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমরা নিরুপায়। তাই এ তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টি লাভের আশায় আকাশের নিচে এই ফুটবল মাঠে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করা হয়েছে।