গাংনীতে প্রতিবন্ধীর দোকানে অগ্নিসংযোগে মানবেতর জীবনযাপন
রাব্বি আহমেদঃমেহেরপুরের গাংনীতে দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রতিবন্ধী আব্দুল আলীম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
প্রতিবন্ধী আব্দুল আলীম গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের সর্দার পাড়ার শামসুল আলম সর্দারের ছেলে।
আব্দুল আলীম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, গত ১১ জুলাই মধ্যরাতে আমার বাড়ির সাথে ভ্যারাইটি স্টোরে পূর্ব শক্রতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পেট্রোল দিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে আমার দোকানে ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ টাকা, টিভি, ফ্রিজসহ দোকানে সাজানো সকল মালমাল পুড়ে ছায় হয়ে যায়। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমার দোকান ও শয়নকক্ষের দেয়াল ও ছাদও পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতিতে আমি একেবারে পথে বসে গেছি। আমি পঙ্গু অক্ষম হওয়ায় পরিবারের লোকজন নিয়ে একেবারে পথে বসে গেছি। আমার পা না থাকায় কোন কাজকর্মও করা সম্ভব নয় যাতে করে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নিজের সংসার চালানো যায়। এমন গচ্ছিত অর্থও নেই যা দিয়ে নতুন করে কোনভাবে দোকানটা চালু করে বসতে পারি। অবস্থা ঠিক এমন যে, না খেয়েই দিনাতিপাত করছি। সেদিন ফায়ার সার্ভিসের টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনলে আমার পুরো বাড়ি পুড়ে ছায় হয়ে যেতো। এমতবস্থায় আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।
তিনি জানান, দোকানের পাওনা টাকা চাইতে ঈদের সপ্তাহ খানেক পূর্বে বাকবিতন্ডা হয় প্রতিবেশী আতাহার আলীর ছেলে সিরাজ এর সাথে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। কথানুযায়ী ১১ জুলাই মধ্যরাতে তার ভাই জাহিদ কে নিয়ে শাবল দিয়ে আমার দোকানের শাটার তুলে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এতে দোকানের সকল মালামাল পুড়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। অগ্নিসংযোগকারীদের বিচার ও ক্ষতি পুরণে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানালে মামলা করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমি গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১ জন আসামিকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু আমিতো নিঃস্বই হয়ে রইলাম।
এলাকাবাসীরা জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বাকি ১ জন আসামিকে আটক ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে ৪ দিন পূর্বে মানববন্ধনও করেছে এলাকাবাসী। কিন্তু কে শোনে কার কথা। কোন লাভ হয়েছে বলে মনে হয়না। সমস্ত সম্বল হারিয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে এখন।
প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসীরা অবিলম্বে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতারসহ নতুনভাবে আর ১০ জন মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপনে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
একইসাথে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।