গাংনীতে পিতার উপর অভিমান করে প্রতিবেশীর ওপর সশস্ত্র হামলা
মেহেরপুরের গাংনীতে পিতার উপর অভিমান করে প্রতিবেশীর ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ছাতিয়ান হাওড়া পাড়া গ্রামে।
ওই গ্রামের মৃত রহমত উল্লার ছেলে আররোজ উল্লাহ নীল চোখ’কে জানান, গত ১৩ মার্চ শনিবার রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে প্রতিবেশী ইউসুফ আলীর ছেলে জাব্বার আলি (৩৫), ফরহাদ আলি (২৫), ফয়সাল আলি (২২) দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় হাতুড়ি দিয়ে আমার বাড়ির সদর দরজায় এলোপাতাড়ি কোপায়। আমি দরজা খুলে দিলে আমাকে প্রাচীরের সাথে চেপে ধরে ধারালো ডাসা দিয়ে কোপ মারে। আমি মাথা সরিয়ে ফেললে প্রাচীরে লাগে। তারা আমাকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এরপর আমাদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে। প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। গালাগালির একপর্যায়ে জাব্বার দৌড়ে এসে আমার স্ত্রীর পেটে স্বজোরে লাথি মারে। লাথির আঘাতে আমার স্ত্রী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং স্থানীয় লোকজন তাদেরকে ওইখান থেকে সরিয়ে দেয়। আমাদের ওপর কেন হামলা করেছে তা আমরা জানিনা। তাদের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই। এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই।
আরোজ উল্লার স্ত্রী জাহানারা খাতুন গাংনীর চোখ’কে জানান, তাদের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই। হঠাৎ তারা আমাদের উপরে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
জাব্বার আলীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জাব্বার আলীর বাবা ইউসুফ আলী আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে চুয়াডাঙ্গায় চলে গেছে। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো খোঁজ-খবর নেয় না। এখানে তার যা জমি জায়গা ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন বাড়ির ভিটা বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে। আরজ উল্লাহ তার সাথে যোগাযোগ রাখে এবং এই জমি কিনতে চায়।
স্থানীয় লোকজন গাংনীর চোখ’কে জানান, ওই দিন রাত দশটার দিকে গেটের দরজায় আঘাত ও চিৎকার-চেঁচামেচি শব্দ শুনে দৌড়ে আসি। তাদের উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করি। এরইমধ্যে আরোজ উল্লাহর স্ত্রীর পেটে লাথি মারলে সে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর জাব্বাররা তিন ভাই গালাগালি দিতে দিতে তাদের বাড়ির দিকে চলে যায়।
পরে ওরা তিন ভাই স্থানীয় শাহিন ড্রাইভারের মাইক্রোবাস ভাড়া করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় তাদের বাবাকে আক্রমন করার উদ্দ্যেশে চলে যায়।
ছাতিয়ান গ্রামের শাহীন ড্রাইভার গাংনীর চোখ’কে জানান, আমার মাইক্রোবাসটি ১৫’শ টাকা ভাড়া মিটিয়ে আমাকে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে যায়। তাদের উলটাপালটা কথাবার্তা শুনে আমি তাদেরকে চুয়াডাঙ্গায় নামিয়ে দিয়ে চলে আসি। এছাড়া আমি কিছু জানিনা।
গাংনী থানার ওসি মোঃ বজলুর রহমান গাংনীর চোখ’কে জানান, উভয় পক্ষ থেকে দুটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।