গাংনীতে নিম্ন মানের ইটবালি দিয়ে রাস্তা নির্মান। প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের ক্যাডারের হাতে সমাজ সেবক লাঞ্চিত-প্রতিবাদে মানববন্ধন
মেহেরপুরের গাংনীর রাধাগোবিন্দপুর ধলাগ্রামে হেরিং বন্ড (এইবিবি) স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা।
শনিবার দুপুরে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তীর যোগসাজগে ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের হাল মাঠের রাস্তায় হেরিং বন্ড করার সময় নিম্ন মানের ইট ও কাঁদাযুক্ত বালি দিয়ে করার করার অভিযোগে গ্রামের লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ করে দেন তিনি। এদিকে নিম্নমানের মালামাল অপসারন করে বিধি মোতাবেক কাজ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসি।
এদিকে স্থানীয় সমাজ সেবক খোরশেদ আলম খুশি মিয়া রাস্তায় নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার বন্ধের দাবি করলে ঠিকাদারের ক্যাডার রাধাগোবিন্দপুর ধলা গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে পলাশ তাকে লাঞ্চিত করে। এসময় গ্রামবাসির সাথে ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানা গেছে,দূর্যোগ ব্যবস্থপনা অধিদপ্তরের গ্রামীন মাটির রাস্তা সমূহ টেকসই করণ প্রকল্প।পর আওতায় (২য় পর্যায় প্রকল্প এইবিবি) গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ধলা গ্রামে দুটি মাঠের রাস্তা রয়েছে। একটি রাস্তার ঠিকাদার মেহেরপুরের ইসমাইল হোসেন অপরটি তেরাইল গ্রামের রিটু।
ধলা মাঠের রাস্তাটি প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে লটারির মাধ্যমে কার্যাদেশ পায় মেহেরপুরের ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন। কাজটির শুরুতে কাঁদাযুক্ত বালি নিম্নমানের ইট ও বিধি মোতাবেক কাজ না করার অভিযোগ উঠে। এনিয়ে ঠিকাদার সহ তার লোকজনের সাথে কয়েক দফায় গ্রামবাসির সাথে বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।
কাথুলী ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ড সহসভাপতি আব্দুল বারী বলেন,নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এলাকাবাসি অভিযোগ তুললে ঠিকাদারের ক্যাডার বাহিনী খোরশেদ আলম খুশি নামের এক সমাজ সেবককে লাঞ্চিত করে। এঘটনায় ঠিকাদার ও তার ক্যডার বাহিনীর বিচার দাবি করেন তিনি।
ধলা গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, রাস্তায় ইট ও বালি নিম্নমানের ব্যবহার করা হচ্ছে। ঠিকাদারকে বললে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দিচ্ছে।
স্থানীয় আব্দুল খালেক বলেন, সরকার ১ নং ইট ও উন্নত মানের বালি ও বিধি মোতাবে পানি ব্যবহার করতে নির্দেশনা দিলেও ঠিকাদার নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম ও ফারুক হোসেন বলেন,এই রাস্তার জন্য কৃষক থেকে শুরু করে এই অঞ্চলের মানুষ চরম দূর্ভোগে ছিলো। এলাকাবাসির প্রত্যাশা ছিলো সরকারী বিধি মোতাবেক কাজ হবে কিন্তু ক্ষমতার দাপটে নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে।
সমাজ সেবক খোরশেদ আলম খুশি বলেন,সরকারী টাকা তসরুপাত হচ্ছে এটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্চিত হয়েছি। কি আর বলবো। এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি ঠিকাদার ইসমাইল হোসেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তীর মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি প্রথমে কেটে দেন পরে আবারো কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেনি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন,নিম্নমারে সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগের প্রক্ষিতে কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
দূর্যোগ ব্যবস্থপনা অধিদপ্তরের গ্রামীন মাটির রাস্তা সমূহ টেকসই করণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,কোন ভাবেই নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করা যাবেনা। সরকারী বিধি মোতাবেক কাজ করতে হবে। নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে বিল বন্ধ সহ এ বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারের বদনাম হয় এমন কাজ কোন ভাবেই করতে দেয়া হবেনা।