গাংনীতে ক্লিনিক মালিকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের জেল জরিমানা
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী করবী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। পরে ওই ক্লিনিকের বিভিন্ন ত্রুটি থাকাই ক্লিনিক মালিক জাহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাদির হোসেন শামীম।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার কলিতলা কল্যাপুর গ্রামের পিংকুর স্ত্রী রিভা খাতুন(২২) প্রসব বেদনা উঠলে তার পরিবারের লোকজন করবি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভোরের দিকে ভর্তি করেন। ডাক্তার আসছে, আসবে, চলে এসেছে, বলে ওই রোগীকে প্রায় ছয় ঘন্টা আটকে রাখে ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষ। পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ সিজারিয়ান অপারেশন করেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার বিডি দাস।
সিজারিয়ান অপারেশন করার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। নবজাতকের মৃত্যুর পর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ তড়িঘড়ি করে রোগী ও নবজাতককে ক্লিনিক থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে, রোগী স্বজনরা জোরপূর্বক অবস্থান নেন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গাংনী উপজেলা সরকারি কমিশনার ভূমি নাদির হোসেন শামীম ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সু-প্রভা রানি।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল অফিসার বিডি দাসের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গাংনী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সু-প্রভা জানান, ডাক্তার আসার অজুহাতে সিজারিয়ান রোগীকে প্রায় ছয় ঘন্টা হাসপাতালে রাখার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। হাসপাতালের বৈধ কাগজ পাত্র না থাকার সততা স্বীকার করেন তিনি।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাদির হোসেন শামীম জানান, ৬ ঘন্টা রোগীকে আটকে রেখে তারপর সিজারিয়ান অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে, অভিযান চালিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০০৯ এর ৫২ ধারায় করবি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ কে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্যঃ ২০২১ সালে ১৮ মে সিড়ি দিয়ে নামার সময় করবি ক্লিনিকের মালিক জাহিদুল ইসলাম বিদ্যুৎ নারী কর্মচারীকে জোর পূর্বক জড়িয়ে ধরে শ্লিলতাহানির চেষ্টা করে। বারবার অনুরোধ করার পরও ছেড়ে না দিলে তার ১৫ বছরের ছেলে ঘটনাটি দেখে। পরদিন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন স্থানে তদবির করার পর দুই লাখ টাকার বিনিময়ে সমাধান হয়। একটি লিখিত স্ট্যাম্পে ওই মহিলার স্বাক্ষর নেওয়ার পর রফাদফা করা হয়।