গাংনীতে এমপি’র কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে আওয়ামী লীগ
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক ও সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অশালিন বক্তব্য ও নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে মেহেরপুর-২(গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য এবং গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে আওয়ামী লীগের একাংশ।রবিবার (০৫জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে গাংনী বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।সমাবেশে বক্তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে গাংনী বাস স্ট্যান্ডে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এসব নেতাদের বিরুদ্ধে অশালিন বক্তব্য দেন সাহিদুজ্জামান খোকন। এ অভিযোগে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের একাংশ।প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ খালেক বলেন, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কুটুক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত জনসভায় বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা না বলে মেহেরপুর-২ আসনের এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন তাদের পক্ষে কথা বলেছেন। আর এ কারণে সন্ধ্যার পর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা আমার বাড়িতে জড়ো হয়ে এমপির বাড়ি ঘরে হামলা ও তাকে উচ্ছেদের দাবী করেছে আমার কাছে। আমি তাদের নিবৃত করেছি। বলেছি রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদের যায়গা আছে সেখানেই তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।তিনি বলেন, এমপির দেহে যে বিএনপি ও জামায়াতের রক্ত প্রবাহিত সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে সে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মানহানিকর বংশগতভাবে কটাক্ষ করেছেন এমপি খোকন। তিনি এমপি সাহিদুজ্জামান খোকনকে ফকিন্নির বাচ্ছা উল্লেখ করে এমএ খালেক বলেন, এমপি হওয়ার সাড়ে তিন বছর আগে তার নামে ব্যাংকে কোনো টাকা দেখাতে পারবে না। দেখাতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।
৭৫ লাখ টাকা খরচ করে উপজেলা সভাপতি হয়েছে বলে দাবী করে তিনি নাকি ৭৫ কোটি টাকা খরচ করে আগামীতে সংসদ সদস্য হবেন। তার জালা, বড় জালা, সভাপতি হয়েছে কোনো খবর নেই, কেউ তাকে ফুলের তোড়া সংবর্ধণা বা সম্মান দেইনি মর্যাদা দেইনি। সে সভাপতি হওয়াতে মানুষ টেনশনে পড়ে গিয়েছে। অথচ, মাত্র ১ মাস পর আমি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর ১০/১২ দিন যাবৎ এলাকার শত শত মানুষ আমাকে লাইন ধরে সংবর্ধণা দিয়েছেন। এটা তার খুব জালা ধরেছে। অন্তরে বড় জালা। এই জালার কারণে সে আমার বিরুদ্ধে মঞ্চে আবোল তাবোল বলেছে।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাদের প্রয়োজনে কাউকে রাজাকার বলে, কাউকে হাইব্রীড বলেন, অনেক সময় এজন্য মানুষ ভাবে প্রতিপক্ষকে এভাবে বলা আমাদের কালচার। অনেক সময় আমরা বলে ফেলি সে রাজাকারের সন্তান। অনেকেই ধরে নেন ওটা কালচারেরই অংশ। খোকন আসলে রাজাকারের সন্তান তাও মানুষ ধরে নেই ওটাও কালচারের অংশ। আমরা প্রতিপক্ষ তাই হয়তো বলছি। কিন্তু অরজিনাল তিনি রাজাকারের সন্তান। অনেক রাজাকারকে বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করে দিয়েছেন। তারা সমাজে ভালভাবে চলাফেরা সব কিছই করতে পারেন। আমরা তাকে রাজাকারের সন্তান বলতে চাইনা। খোকনের বাবা গনি বিশ্বাস, অত্যাচারী, অগ্নি সংযোগকারী, গণহত্যাকারী, ধর্ষণকারী রাজজাকার। যার কোনো ক্ষমা নেই। বেঁচে থাকলে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার হতো। আজকে ফাঁসির জন্য প্রস্তুত হতো। সেই রাজাকারের পুত্রকে রাজাকার বললে খুব জালা হয়।
ফ্রীডম পার্টির মামলায় জেল খাটার কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০১ সালের পর অনেক মামলা হয়েছে আামার নামে। আমি অন্য কোনো মামলায় জেল না খাটলেও ফ্রীডম পার্টির মামলায় আমি জেল খেটেছি। ফ্রীডম পার্টির টাকা নিয়েছেন খোকন আমি তা যথেষ্ট প্রমাণ করতো পারবো।
তিনি বলেন ,২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের চিফ এজেন্ট ছিলেন খোকন। ৮৩ টি সেন্টারের মধ্যে আমার ৪০ টি সেন্টারে আমার এজেন্ট ছিলনা। যারা নৌকার সীল মেরে ছিলো তারাও নৌকার এজেন্ট ছিল। কিন্তু আমার এজেন্ট ছিলনা। সে আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে বিরোধী দলের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে। এধরনের বিশ্বাস ঘাতক কেউ করেনা। রাজাকার, স্বাধীনতা বিরোধী যে চরিত্র ছিল তার বাবার যে রক্তের ধারা বিরাজমান। সেই রক্তের ধারা অনুযায়ী চরিত্র। ২৪ বছর যাবৎ আওয়ামীলীগের মুল সমস্যাকে খোকনের সৃষ্ট উল্লেখ করেন তিনি।তার উদ্দ্যেশ্য রাজাকার পরিবার থেকে আসা তাদের সুবিধা দেওয়া আর নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা তার মুল উদ্যেশ্য।
তিনি সাম্প্রতিক কমিটি গঠণ নিয়ে বলেন আমি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে গাংনীতে রাজাকারমুক্ত কমিটি গঠণ করার জন্য বলেছি। সে আমাকে আসস্থ করেছেন। সম্মেলনের দিনে তিনি আমাকে একটি ম্যাসেজ দিলেন সেটিও আমি বিএম মোজাম্মেল হককে বলেছি। কিন্তু বিএম মোজাম্মেল সেটি করে করেই গেছে। আমরা যদি পাশ না করি শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের কমিটি যদি পাশ না করে সেটা পাশ হবেনা হবেনা হবেনা।বিক্ষোভ মিছিলে গাংনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পপাদক আনারুল ইসলাম বাবু’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্যসাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।