গম উৎপাদন কলাকৌশল ও ব্লাস্ট রোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মেহেরপুরে প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ
ব্লাস্ট নামক ভয়ঙ্কর এক ছত্রাকের আক্রমণে মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় গম আবাদ বিরাট সংকটের মুখে পড়ে। অবশ্য এ সংকট দ্রুতই উত্তোরণ করতে সক্ষম হয়েছেন দেশের গম বিজ্ঞানীরা। ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের জাত বারি গম ৩৩ উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের গম আবাদের সুবাতাস বইতে থাকে। নতুন উদ্যোমে আবারও শুরু হয় গম আবাদ। পরবর্তীতে ব্লাস্ট প্রতিরোধী আরও একটি জাত ডাব্লিউএমআরআই গম ৩ গমের জাতের তালিকায় যুক্ত হয়। বারি গম ৩৩ চাষীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তার সাথেই আবাদ হচ্ছে। গমের জাত নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি ব্লাস্ট প্রতিরোধী দু’টি জাত এবং ব্লাস্ট সহনশালী জাত ডাব্লিউএমআরআই গম ২ আবাদ সম্প্রসারণে নিরলসভাবে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। যার ধারাবাহিকতায় গম উৎপাদন কলাকৌশল ও ব্লাস্ট রোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কৃষক ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষনের আয়োজন করা হয়।
সোমবার মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ কক্ষে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেন কৃষি কর্মকর্তা ও গম চাষীরা।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ও বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডাব্লিউএমআরআই) কর্তৃক বাস্তাবায়িত বাংলাদেশে গমের ব্লাস্ট রোগ ব্যবস্থাপনা, ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে গমের ব্লাস্ট প্রতিরোধী নতুন জাত বারি গম ৩৩ ও ডাব্লিউএমআরআই গম ৩ এবং ব্লাস্ট সহনশীল জাত ডাব্লিউএমআরআই গম ২ এর বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডাব্লিউএমআরআই) দিনাজপুরের কেজিএফ প্রকল্পের প্রধান ও উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গবেষক ড. মোহাম্মদ রেজাউল কবীর। উপস্থিত ছিলেন বিডাব্লিউএমআরআই যশোর আঞ্চলিক কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীর মিঞা। প্রশিক্ষণ শেষে কৃষকদের মাঝে গম বীজ ও প্রয়োজনীয় সার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার ও জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মেহেরপুরসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় গমের ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়ার পর থেকে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভিন্ন দেশী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় ব্লাস্ট রোগ দমনে কাজ করে আসছে।