কে হবেন মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের মাঝি
রাত পোয়ালেই দেড়যুগ পর মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন । কে হবেন সভাপতি, কে হবেন সাধারণ সম্পাদক সেই হিসেবে নিয়ে ব্যস্ত নেতাকর্মীরা। নানা জল্পনা কল্পনা চলছেই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যারা প্রার্থী হচ্ছেন সকলেই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের জন্য বিভিন্ন ভূমিকা রেখেছেন।
তিন বছরের জন্য দায়িত্ব নেওয়া কমিটি পার করছে দেড়যুগ। আর এ দেড়যুগে কমিটির প্রায় ১৫ জন পদস্থ নেতা মৃত্যুবরণও করেছেন ইতিমধ্যে। নতুন করে সম্মেলনকে ঘিরে আবারো নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। সম্মেলনের দিনেই দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তবে এবারের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যেন নির্বাচনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় সে দাবিও করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সম্মেলনকে ঘিরে ইতিমধ্যে কাউন্সিলর ও সাবজেক্ট কমিটির নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এবারের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে ৫জন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ৮জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে কে হবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সে হিসেবে সম্মেলন হওয়ার আগে বলা কঠিন। তবে যোগ্য প্রার্থীকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করবেন নেতারা। সভাপতি পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- মেহেরপুর পৌর মেয়র ও জেলা যুবলীগের আহবায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, দেড় যুগ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা আক্কাস আলী, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন বুলবুল, জেলা স্বেচ্ছা সেবক লীগের আহবায়ক আরিফুল এনাম বকুল।
সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান, সাবেক ছাত্র নেতা আমিনুল ইসলাম খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. খ.ম হারুন ইমতিয়াজ জুয়েল, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশান সাবের, জসিউর রহমান বকুল, সাবেক ছাত্র নেতা হাসানুজ্জামান হিলন, যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলর আল মামুন, জেলা শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
সভাপতি প্রার্থী আক্কাস আলী ১৮ বছর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে রয়েছি। তিনি যেখানে মনে করবেন সেখানে রাখবেন। তবে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে চেষ্টা করছি। দায়িত্ব পেলে সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করবো। না পেলে কোন খেদ নেই।
অপর সভাপতি প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম সাজেদুল বলেন, সভাপতি প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছি। বেশ সাড়া পাচ্ছি। এখনো চেষ্টা করছি কাউন্সিলরদের মন জয় করার।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান মফিজ বলেন, ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে রাজনীতি করছি। কয়েকবার কারাবরণও করেছি। বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি এবং এখনো করছি। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলে দলকে শক্তিশালী করতে পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবো।
অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশান সাবের বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। মেহেরপুর সদর উপজেলা ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি যেভাবে সাবজেক্ট কমিটির ভোটে কমিটি হয়েছে। আশা করছি একইভাবে মেহেরপুর পৌর কমিটিও গঠন হবে। সে হিসেবে সাবজেক্ট নেতাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ৭ আগস্ট তিন বছর মেয়াদে ৬৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী কমিটি ও ১৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও নতুন কমিটির মুখ দেখেনি দলটির নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ এই ১৮ বছরে কার্যকরী কমিটির ৭জন এবং উপদেষ্টা পরিষদের ৮জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
মৃতবরণকারী নেতারা হলেন, কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি ডাঃ ওমর ফারুক, দপ্তর সম্পাদক খোকন মিয়া, সদস্য খাদেমুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ হারু, পন্টু মিয়া, জহির রায়হান সেন্টু, মোশারফ মন্ডল।
উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে আব্দুল মজিদ মাস্টার, মাহাবুবুর রহমান মধু, আব্দুল গণি, আব্দুল মহিত লাল্টু, আমজাদ হোসেন, বাবুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম রফিক, শ্রী মহিমা রনজন পাল বাটুল বার্ধক্যজনিত ও বিভিন্ন কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তিন বছর মেয়াদে মেহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগ গঠন করা হলেও বর্তমানে এই কমিটির বয়স ১৮ বছর। শুধুমাত্র কমিটি না হওয়ার কারণে মৃতরাও গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে আছেন।
বর্তমান এ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো: আক্কাস আলী।