কুষ্টিয়ায় বিচারের নামে যুবককে মারধর, আটক ৩
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরোকীয়ার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে শালিশি বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয় মাতব্বরা।
সোমবার (১২ জুলাই) এ মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর থানা পুলিশ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নওয়াব আলী, আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক আলী। ঘটনার পর থেকে সাইফুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মালিহাদ ইউনিয়নের আশাননগর গ্রামের সেন্টু আলীর ছেলে ইটভাটার শ্রমিক সাইফুল ইসলামকে পরকীয়া করার অভিযোগে স্থানীয়রা আটক করে। পরদিন সকাল ১১টায় আশাননগর গ্রামের মোড়ে এ নিয়ে শালিস বসে।মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন বিচারের রায় ঘোষণা করেন। সাইফুল ইসলামকে জুতোর মালা গলায় দিয়ে অর্ধেক গ্রাম ঘুরানো হয়। সেইসঙ্গে ৩০ বার লাঠিপেটা এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে, ওই নারীর সঙ্গে তার স্বামী সংসার করতে রাজি না হওয়ায় শালিসে তালাক দেওয়ানো হয়। পরে স্থানীয়রা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে দিতে চাইলে তাতে ওই নারী আপত্তি জানালে তাকে মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমিরুল ইসলাম জানান, পুরো গ্রামের লোকজনের সামনে জুতোর মালা গলায় দিয়ে নেতারা ঘুরিয়েছে। সেইসঙ্গে সাইফুল ইসলামকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। দেশে আইন রয়েছে, অপরাধ করলে আদালত বিচার করতো। এভাবে শালিস করে নির্যাতন করা অন্যায়।
এ ব্যপারে মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচারের নামে লাঠি দিয়ে মারধরের ভিডিও দেখে আমরা ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে জুতোর মালাসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।