কুষ্টিয়ায় প্রেমের জেরে কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নয়ন কুমার সরকার (২২) নামের এক কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১৭ জুলাই) রাতের কোনো এক সময় উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রামের মাঠের মধ্যে এঘটনা ঘটেছে।
ভোরবেলায় স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পথে দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নয়ন কুমারখালী উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের গ্রামের যগরেশ কুমার সরকারের ছেলে। সে আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
নিহতের স্বজনরা দাবি করছেন, প্রেম সংক্রান্ত জেরে নয়নকে ডেকে নিয়ে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সারা শরীরে রক্তাক্ত আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে নিঁখোজ ছিল কলেজ ছাত্র নয়ন কুমার সরকার। পরিবারের সদস্যরা সারারাত খোঁজাখুজি করেও কোথায় পাইনি তাকে। এরপর ভোররাতে মুঠোফোনে খবর আসে নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ নতুনপাড়া মাঠের মধ্যে সড়কের পাশে নয়নকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে স্বজনা দ্রুত ছুটে যায় এবং আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য হাসপাতালে পাঠায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে দুপুরে ঢাকা যাওয়ার পথে তার মৃত্য হয়।
নিহতের বাবা যগেশ কুমার সরকার বলেন, গতকাল মধ্যরাত থেকে নয়ন নিখোঁজ ছিল। মুঠোফোনটিও বন্ধ ছিল। অনেক খোঁজাখুজি করেও কোথাও পাইনি। পরে রোববার ভোররাতে মাঠের মধ্যে সড়কের পাশে পড়ে থাকার খবর পেয়ে ছুটে যায়। গিয়ে নয়নকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠায় পরে ঢাকা যাওয়ার পথে মারা যায়া।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় এক মুসলিম মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এনিয়ে পারিবারিকভাবে নয়নকে শাষণ করেছিলাম। ওই মেয়ের পরিবারের সদস্যরাই ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি উপযুক্ত বিচার চাই।
নিহতের বোন লতা রাণী বলেন, ওরা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি হত্যার বদলে হত্যা চাই। আমরা বিচার চাই।
এবিষয়ে নন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর শাহীনুর রহমান বলেন, সকালে সড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল নয়ন। সারা শরীরের জখম ছিল। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা খারাপ থাকায় সেখানকার চিকিৎসক ঢাকা পাঠায়। ঢাকা যাওয়ার পথে দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, গুরুতর অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬টার দিকে নয়নকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রিফার্ড করা হয়।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বিষয়টি অবহিত হয়েছি। লাশ মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্ত শেষে সব জানা যাবে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।