কুষ্টিয়ায় একই স্বামীর সাথে দুবার বিয়ে করেও স্বামীর বাড়িতে ঠাই হয়নি অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর !

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:34 PM, 16 August 2020

কুষ্টিয়ায় স্বামীর স্বীকৃতি পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী আফরোজা আক্তার লতা (২০)। কুষ্টিয়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে লতা মামলা দায়ের করলে আদালত স্বামী রাফিজ ইকবাল রাজু (২১) কে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জান গেছে, গত ১০ জুলাই ২০১৯ কুুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামী দূর্গাপুর ইউনিয়নের শংকরদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম ওরফে খবির এর পুত্র রাজু’র সঙ্গে একই থানার লক্ষী পুর গ্রামের আবদুর রশিদ এর কন্যা লতার বিয়ে হয়। কুষ্টিয়া শহরের মতি মিয়ার রেলগেট সংলগ্ন আবদুর রব দিলু কাজীর অফিসে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে সম্পন্ন হয় । বিয়ের পর তারা দুইজন ঢাকাতে বেড়াতে যায়। ঢাকা থেকে ফিরে রাজু লক্ষীপুর শশুর বাড়িতে বাসবাস শুরু করে। কিছুদিন পর রাজু তার গ্রামের বাড়ি শংকরদিয়া চলে যায়। বাড়িতে গিয়ে রাজু আর কোন খোজ নেয় না লতাকে। পরবর্তীতে লতা শ্বশুর বাড়ি গেলে তার শ্বশুর শাশুড়ী অন্যান্যরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে ২০/৯/১৯ তারিখে শুক্রবার শংকরদিয়া গ্রামের মনার বাড়িতে চেয়ারম্যান দবির উদ্দিন বিশ্বাস এর নেতৃত্বে শালীস বসে। শালিসে জোরপূর্বক এক লাখ টাকার বিনিময়ে তালাক দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু লতা সংসার করবে বলে ওই শালিসের বিচার না মেনে চলে যায়। তবে মধ্যস্থতাকারীদের চাপে ২৫/৯/১৯ কুষ্টিয়া কোর্ট প্রাঙ্গনে যেয়ে এক লাখ টাকার বিনিময়ে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় সে লতা। পরবর্তী সময়ে রাজু লতার সাথে আবারও যোগাযোগ করে। এবং ২৩/৩/২০২০ হরিনাকুন্ডু কাজী অফিসে দেড় লাখ টাকার দেনমোহরের বিনিময়ে তাদের আবার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৩/৫/২০ শ্বশুর বাড়ি গেলে লতাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। পাশেই মহিদুল ইসলাম নামের পুলিশের এ এস আই তাদেরকে দুইদিন আশ্রয় দেয়। দুইদিন পর লতা আবার পিতার বাড়িতে চলে যায়। এরই মধ্যে লতা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গত ৮/৬/২০ ই বি থানায় মামলা দায়ের করতে যায় লতা। সেই সময় থানা মামলা নেয়নি । মামলা না নিয়ে থানা পুলিশ চেয়ারম্যান দবির উদ্দিন বিশ্বাসকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। কিন্তু দবির উদ্দিন বিশ্বাস সব সময় ছেলের পক্ষ নিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। থানা মামলা না নিলে লতা ১৪/৭/২০ আদালতে যৌতুক বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন কুষ্টিয়া আদালতে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সমন জারী করে। আসামির উপস্থিতিতে বিচারক উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আসামি রাজুকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। লতা ২০১৮ সালে খাতের আলী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও আর লেখাপড়া হয়নি। রাজু শংকরদিয়া কলেজ থেকে দুইবার পরীক্ষা দিয়ে এইচ এস সি ফেল করে। তার পিতা রবিউল ইসলাম ওরফে খবির ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তার প্রথম পুত্র পুলিশ কনস্টেবল হওয়ায় কাউকে পরোয়া করেন না তিনি। তিনি স্পষ্ট বলেছেন লতাকে কখনো পুত্র বধূ হিসেবে মেনে নেবেন না হাওয়ায় যে মেয়ে গর্ভবতী হয় তাকে তিনি কোনদিন মানবেন না বলে ঘোষণা দেন। জানা গেছে, তিনি কাজী নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু কাজীর মাধ্যমে লতাকে আবারও তালাক দেয়ার পায়তারা করছেন।

আপনার মতামত লিখুন :