কুষ্টিয়ায় আরও ২২ জনের মৃ’ত্যু !! শনাক্ত-২২০
করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। জুন মাসে পুরোটাই কুষ্টিয়ায় করোনা দাপট ছিল। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। কুষ্টিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে টানা ২৭ দিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন চলমান থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি, বরং দিন দিন তা ভয়াবহ অবস্থার রূপ নিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আরও ১২ এবং উপসর্গে ১০ জন মারা গেছেন। সবমিলিয়ে একদিনে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.তাপস কুমার সরকার,এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল ৮ টা পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল।
জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় আরও ২২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার কমে ২৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ হয়েছে। এই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১৮ জন।
শনাক্তদের মধ্যে সদরে ৮৩ জন, আর সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরে ৫৯ জন। গত ৭ দিনে কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ৬৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এই ৭ দিনেই এখানে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০৮ জনের মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত শনাক্ত হলো ৯ হাজার ৬৬৪ জন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, করোনা ডেটিকেডেট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছেই, ২শ’ বেডে করোনা ও এর উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে আছেন ২৮৯ জন রোগী। এর মধ্যে ২০২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীদের অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনে হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৮-১০ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জুনে করোনার দাপট বাড়বে, এমন একটা ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। তবে এতটা হবে, সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। মানুষকে সচেতন করা ছাড়া আর করোনা মোকাবিলার কোনো পথ নেই।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহের জন্য কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধি নিষেধ বা লকডাউন চলবে। এ সময় ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।