কুষ্টিয়ায় আরও ১৪ জনের মৃ’ত্যু !! শনাক্ত-২৭৭
করোনা সংক্রমণের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় প্রথম কুষ্টিয়া। জুন মাসে পুরোটাই কুষ্টিয়ায় করোনা দাপট ছিল। অস্বাভাবিক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে কুষ্টিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জন মারা গেছেন। এ সময় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১২ জুলাই) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন, এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এদের মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ১০২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় গতদিনের চেয়ে শনাক্তের হার আরও ১ কমে ২৬.৯৭ শতাংশ হয়েছে।
এদিকে গত ৭ দিনেই কুষ্টিয়ায় ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও এই ৭ দিনে আরও অন্তত ৩০ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। আর গত ৭ দিনে এ জেলায় ১৮শ’ ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র করোনা পজিটিভ ৩৪৯ জনের মৃত্যু হলো।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, আয়া, ক্লিনারসহ জনবল ও জায়গার সংকট দেখা দিচ্ছে। এত রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার মত সামর্থ্য এই হাসপাতালের নেই। অসংখ্য রোগীকে তারা সাপোর্ট দিতে পারছেন না। রোগীদের যে ধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া দরকার তার ব্যবস্থা এখানে নেই। গত এক সপ্তাহে জেলায় প্রায় দুই হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ।’
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনে হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ১৫ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। তবে এতটা হবে, সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। মানুষকে সচেতন করা ছাড়া আর করোনা মোকাবিলার কোনো পথ নেই।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহের জন্য কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধি নিষেধ বা লকডাউন চলবে। এ সময় ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচাবাজার ছাড়া বাকি সব ধরনের দোকান, শপিংমল বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।