ইউনূসকে নিয়ে বিশ্ব ব্যক্তিত্বদের বিবৃতি হতাশাজনক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী


গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা ১৭৫ জন বিশ্বনেতা ও নোবেলজয়ীর চিঠির বিষয়ে সরকার বিচলিত নয় বা কোনো চাপে নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বিবৃতির বিষয়টি হতাশাজনক মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। এ ব্যাপারে বিচার বিভাগই সিদ্ধান্ত নিবেন। বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে কোরিয়ান দূতাবাস আয়োজিত কোরিয়া-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাবিষয়ক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তবাকের বিশ্বে যে কোনো অবস্থান থেকে যে কেউ যে কোনো কিছু বলতে পারে এবং আউট অব দ্য ওয়ে যেভাবে বলি না কেন এখানে সরকারের কোনো প্রভাব ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগ যেটা মনে করেন, তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে সেটাই করবেন। একটি বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান দ্যাটস আন হাড অফ। যারা এই আবেদনে শামিল হচ্ছেন, আমি মনে করি না তারা তাদের সুনামের (রেপুটেশন) প্রতি ন্যায়বিচার করছেন। একটা বিচারকে তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। সেটাকে আমরা স্বাগত জানাব।’
ইউনূসকে নিয়ে বিশ্ব ব্যক্তিত্বদের বিবৃতি হতাশাজনক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
হঠাৎ কেন আলোচনায় ড. ইউনূস?
তিনি আরও বলেন, একজন ব্যক্তি যিনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, যিনি শত শত হাজার মানুষকে নিয়োগ করেছেন, যার সম্পদ আছে তার তো আইনি ইস্যু থাকতেই পারে। তার মানে এই না যে, সে অপরাধী হয়েই যাবে বা তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করাই যাবে না। পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি কি আছেন যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা তদন্ত করা যাবে না বা কোর্টে নেওয়া যাবে না?’ একজনকে সুরক্ষার জন্য এমনটা হতাশাজনক। অতীতেও কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক মর্যাদা শুধু তার গুনের কারণেই হয়েছে তা নয়। এর পেছনে অনেক বিনিয়োগ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ড. ইউনূস) বা তার লোকজন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন– এতে কোনো সন্দেহ নেই। এখানে (মামলায়) সরকারের প্রভাব অতীতে ছিল না এবং আগামীতেও থাকবেও না। বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।
ড. ইউনূসের সঙ্গে সরকারের কোনো দূরত্ব বা এজেন্ডা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা ১/১১’র ঘটনা প্রবাহ জানেন। তারপর গত ১৫ থেকে ১৭ বছরের আমাদের দিক থেকে কিছু নেই। কিন্তু আমরা যেটা দেখেছি, যেটার প্রতিফলন আপনারা আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে দুই পাতা ভাড়া করতে অন্তত পক্ষে মিলিয়ন ডলার লাগে, সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে একটা পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মতো স্বাক্ষর নিয়ে, যে স্বাক্ষরের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত। তিনি বা তার লোকজন এখনো অর্থ বিনিয়োগ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু এ মামলার সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই।’
এ ধরনের কার্যক্রমে বাংলাদেশের বন্ধুদের কাছে ভুল মেসেজ যাচ্ছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার বলেন, বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে সরকার ও বিদেশে দূতাবাসগুলো এ বিষয়ে তুলে ধরবে। একটা বিচারাধীন বিষয়ে সরকার বা আমাদের দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন করে ব্যাখা বা বলার কিছু নেই। কারণ আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।