“আওয়ামীলীগের জন্মেই বাংলাদেশের জন্ম”

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:43 PM, 23 June 2021

পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্মের সাথে মুসলিম লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হক নেতৃত্বাধীন ঢাকার ১৫০ নম্বর মোগলটুলিস্থ পূর্ববঙ্গ মুসলিম লীগ কর্মি শিবির ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। কর্মি শিবিরটি ছিল ঢাকার প্রভাবশালী মুসলিম লীগ নেতা শওকত আলীর মালিকানাধীন তিনতলা ভবনের নিচতলায়। কর্মি শিবিরের সকল খরচ চালাতেন শওকত আলি।
তিনি ছিলেন ‘৪৮ এ শুরু হওয়া ভাষা আন্দোলনের প্রথম সারির কর্মি এবং কর্মি শিবিরের অন্যতম নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে কর্মি শিবির প্রতিষ্ঠার নেপথ্যের কারিগর ছিলেন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের নেতা গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক প্রখ্যাত ইসলাম ধর্মীয় পন্ডিত আবুল হাশিম। এই কর্মি শিবির থেকেই ভাষা আন্দোলনের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হত।
১৯৪৭ সালের ১৪ ই আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর নাজিমুদ্দিন এবং মাওলানা আকরাম খাঁর নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল অংশের নেতারা শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। তাদের পরোক্ষভাবে সমর্থন দেন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। নাজিম উদ্দীন সোহরাওয়ার্দীকে ‘ভারতের এজেন্ট’ এবং ‘পাকিস্তানের শত্রু’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য পদ থেকে বরখাস্ত করেন। ফলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং আবুল হাশিম নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
১৯৪৮ সালের প্রথম দিকে মুসলিম লীগের মনোনয়নে উপনির্বাচনে টাঙ্গাইলের একটি আসন থেকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। তবে মুসলিম লীগ সরকারের পূর্ব বঙ্গের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডের সমালোচনা করতে থাকেন তিনি। এ কারনে তার নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করে তাকে হয়রানী করার হীনউদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে মুসলিম লীগ সরকার। পূর্ব বঙ্গের গভর্ণর এক নির্বাহী আদেশ বলে তার নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করে ব্যবস্থাপক সভার উক্ত আসন শূন্য ঘোষণা করেন।
মাওলানা ভাসানী আসাম চলে যান। তাকে আটক করে ধুবড়ী কারাগারে রাখা হয়। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালের ২৬ শে এপ্রিল ঐ আসনের উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ঐ নির্বাচনে মুসলিম লীগের ধনাঢ্য প্রার্থী জমিদার খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে ১৫০ মোগলটুলির কর্মি শিবিরের নেতাদের সিদ্ধান্তে প্রার্থী ঘোষণা করা হয় শামসুল হককে। কর্মি শিবিরের নেতারা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে- কেউ হাতঘড়ি বিক্রি করে, কেউ বাইসাইকেল বিক্রি করে এভাবে নির্বাচনী ফান্ড তৈরি করেন।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে এই নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন এবং নির্বাচনী ফান্ড গঠনের বিষয়ে উল্লেখ আছে। নির্বাচনে মুসলিম লীগ প্রার্থীর কল্যাণে মানুষ প্রথম মাইকের ব্যবহার দেখেন। মুসলিম লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন সহ অসংখ্য মন্ত্রী এবং হেভিওয়েট নেতারা খুররম খান পন্নীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিলেও শামসুল হকের পক্ষে ১৫০ মোগলটুলি কর্মি শিবিরের কয়েকজন কর্মি ছাড়া উল্লেখযোগ্য তেমন কোন বড় নেতা ছিলেন না।
নির্বাচনে শামসুল হক বিপুল ভোটের ব্যবধানে মুসলিম লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী খুররম খানকে পরাজিত করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। কেননা জমিদার খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে শামসুল হক কোন বিবেচনাযোগ্য প্রার্থী ছিলেন না বলে সবাই মনে করতেন। এই রায় যতটা না ছিল খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে তার চেয়ে ছিল মুসলিম লীগ সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে। এই পরাজয়ে মুসলিম লীগ সরকারের ভীত কেঁপে যায়। ফলে ঐ উপনির্বাচনের পর ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আর কোন উপনির্বাচন দেয়নি প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকার। তবে বিজয়ী শামসুল হকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল।
তার জন্য ও নির্বাচনে বিপুল বিজয় সুখকর হল না। একই কায়দায় এবারো নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হল।
এভাবে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের একের পর এক জনবিরোধী কর্মকান্ডের ফলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী এবং শামসুল হক সহ মুসলিম লীগ কর্মি শিবিরের নেতাদের মনে মুসলিম লীগের প্রতি বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এমনি এক সময়ে পূর্ব বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগ নেতা দবিরুল ইসলামের পক্ষে “হেবিয়াস কর্পাস” মামলা লড়তে ঢাকায় আসেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।
এ সময় সোহরাওয়ার্দীর সাথে তার পূর্ব থেকে ঘনিষ্ঠ মুসলিম লীগ কর্মি শিবিরের ব্যবস্থাপক শওকত আলীর কথা হয়। সোহরাওয়ার্দী এ সময় তাকে মুসলিম লীগ ছেড়ে নতুন দল গঠনের নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে শওকত আলী কর্মি শিবিরের নেতৃবৃন্দকে নতুন দল গঠনে উদ্বুদ্ধ করেন।মাওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ঢাকা আসেন। ঢাকায় এসে তিনি আলী আমজাদ খানের বাসায় অবস্থান করেন। মুসলিম লীগ কর্মি শিবিরে তার পূর্বে আসা যাওয়া না থাকলেও ইয়ার মোহাম্মদ খানের সাথে তার যোগাযোগ ছিল।
শওকত আলী মাওলানা ভাসানীকে আলী আমজাদ খানের বাসায় আলোচনার সময় ১৫০ নম্বর মোগলটুলিস্থ কর্মি শিবির ও মুসলিম লীগ ওয়ার্কার্স ক্যাম্পের রাজনৈতিক কার্যক্রমের কথা অবহিত করেন। পরবর্তীতে মুসলিম লীগ কর্মি শিবিরের উদ্যোগে মুসলিম লীগের বিকল্প একটি রাজনৈতিক দল গঠনে ঐকমত্য হয়। লীগ সরকার এ ধরনের উদ্যোগের বিষয়ে টের পেয়ে কর্মি শিবিরের অন্যতম নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে শামসুল হকের টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনের ঠিক দুইদিন পূর্বে ২৪ শে এপ্রিল গ্রেফতার করে নির্যাতনের পথ বেছে নেয়।
অনেককে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখানো হয়। কিন্তু লীগ সরকারের এসব অপকর্ম কোন কাজে আসে নি। দল গঠনের প্রত্যয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এক কর্মি সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সরকারি বাধার মুখে উপযুক্ত জায়গা না পাওয়া গেলে অবশেষে কাজী হুমায়ুন বশীর এবং ইয়ার মোহাম্মদ খানের ইচ্ছায় ঢাকার কে এম দাস লেনের তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাসাদতূল্য বাসভবন ঐতিহাসিক “রোজ গার্ডেন” এ প্রায় ৩০০ কর্মির উপস্থিতিতে ২৩ শে জুন বিকেল তিনটায় উক্ত কর্মি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রখ্যাত আইনজীবি আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে ঐ কর্মি সম্মেলনে “পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ” নামক রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী হন দলটির সভাপতি এবং শামসুল হককে করা হয় সাধারন সম্পাদক। ঐ সময় ভারত উপমহাদেশের সমসাময়িক কোন রাজনৈতিক সংগঠনে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদ না থাকলেও কর্মি শিবিরের তরুণ জনপ্রিয় সংগঠক শেখ মুজিবুর রহমানকে যথাযথ মূল্যায়ন করার প্রত্যয়ে সংগঠনে যুগ্ম সম্পাদক পদ সৃষ্টি করে ১ নং যুগ্ম সম্পাদক করা হয়। শেখ মুজিব এ সময় কারান্তরীণ ছিলেন।
নতুন এ দলটির প্রতিষ্ঠার ৫-৬ দিন পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় ৫৩ সালের যে সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান সাধারন সম্পাদক হয়েছিলেন ঐ কমিটিতেও আওয়ামী মুসলিম লীগে কোন যুগ্ম সাধারন সম্পাদক পদ ছিল না। দলের কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছিল ঢাকার ঐ সময়ের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি ইয়ার মোহাম্মদ খানকে। দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তার অনেক অবদান ছিল এবং তিনি দলকে শক্তিশালী করতে অকাতরে অর্থ ব্যয় করতেন।
আওয়ামী মুসলিম লীগের অনেক নেতার ঢাকায় থাকার সকল খরচ তিনি বহন করতেন। আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা এবং সদস্য মনোনয়ন দিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানী যাদের কারো কারো পূর্বে কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না। দল গঠন এবং পরবর্তীতে সংগঠনটির বিকাশে তাদের অনেকের কোন ভূমিকা ছিল না। পরবর্তীতে অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে যান,অনেকে দল থেকে পদত্যাগ করেন। এই ঘটনায় আওয়ামী মুসলিম লীগের কমিটি গঠনে ভাসানী সাহেবের সাংগঠনিক মুন্সিয়ানা সম্পর্কে প্রশ্ন থেকে যায়। তবে দল গঠন পরবর্তীতে তিনি যোগ্যতার সাথে নেতৃত্ব দেন।
২৩ শে জুনের কর্মি সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক শামসুল হক পূর্ব বাংলা ও পাকিস্তানের সকল ইউনিটের আত্মনিয়ন্ত্রণের পূর্ণ অধিকার প্রদানের দাবিসহ নতুন এ সংগঠনটির জন্য একটি সময়োপযোগী খসড়া ম্যানিফেস্টো প্রণয়ন করেছিলেন। যার ফলে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে মানুষ জানতে পেরেছিল। তবে তিনি বেশিদূর দলকে অগ্রসর করতে পারেন নি।
কারন বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি তিনি এবং দলের সভাপতি মাওলানা ভাসানী কিছু দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হন। বঙ্গবন্ধু ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি গ্রেফতার হয়ে টানা প্রায় ২৬ মাস জেল খাটার পর ভগ্ন শরীর নিয়ে ১৯৫২ সালের ২৭ শে ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেলেও শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে প্রায় দুই আড়াই মাস বাড়িতে থেকে চিকিৎসা ও বিশ্রাম নেন। অতঃপর ১৯৫৪ সালের ৩০ মে গ্রেফতার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই দুই বছর সময় তিনি আওয়ামীলীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
দলের সাধারন সম্পাদক শামসুল হক এ সময় কারাভ্যন্তরে থাকায় দলের ১ নং যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখ মুজিব দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পান। দল গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে এই দুই বছরই ছিল আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক বিস্তারকাল। যার পুরোভাগে নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৫৩ সালের সম্মেলনের কিছুদিন পূর্বে শামসুল হক কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও সরকারের নির্যাতন এবং সুন্দরী স্ত্রীর দুই ফুটফুটে কন্যা সন্তানসহ তাকে ছেড়ে যাওয়ার মানসিক চাপে তার মস্তিষ্ক বিভ্রাট ঘটে। ফলে তিনি দল থেকে বহিস্কার হন এবং সম্মেলনে নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন। সম্মেলনে শেখ মুজিব দলের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগকে শুধুমাত্র মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ১৯৫৫ সালে সকল ধর্ম, বর্নের মানুষের অংশগ্রহণে একটি অসাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামীলীগ’ করার মাওলানা ভাসানীর সিদ্ধান্তের পক্ষে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত জোরালো ভূমিকা নেন।অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী সাহেবের নেতৃত্বে আব্দুস সালাম খান,খন্দকার মোশতাক আহমদ সহ অনেকেই মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন।শেষমেশ বঙ্গবন্ধুর জোরালো প্রচেষ্টার কারনে আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতে সংগঠনের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়।
১৯৫৬ সালে দলের সাধারন সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীত্ব গ্রহণ নিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক অলি আহাদের নেতৃত্বে একটি অংশ দলের মধ্যে বলয় সৃষ্টির অপচেষ্টা চালান।সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত বিচক্ষণ বঙ্গবন্ধু সংগঠনকে শক্তিশালী করার স্বার্থে ১৯৫৭ সালেরর ৩০ মে মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করে দলের সাধারন সম্পাদক পদে বহাল থাকেন।
কারন বঙ্গবন্ধু জানতেন এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে শক্তিশালী সংগঠনের কোন বিকল্প নেই।পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে দলের দায়িত্ব ধরে রাখা বঙ্গবন্ধুর সাংগঠনিক নৈপুণ্যেরই পরিচায়ক।সেদিন বঙ্গবন্ধু ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রটি আজও পেতাম কিনা সন্দেহ আছে।বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর এই সিদ্ধান্তটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকবে।
১৯৫৭ সালের ৭-৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারী সম্মেলনে আওয়ামীলীগ সভাপতি মাওলানা ভাসানীর পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিল এবং পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবির প্রেক্ষিতে মাওলানা ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পক্ষে ভূমিকা নেন।সোহরাওয়ার্দী এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দলের বেশিরভাগ নেতা মাওলানা ভাসানীর প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। এ কারনে মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ইয়ার মোহাম্মদ খান,অলি আহাদ সহ অনেক নেতা আওয়ামীলীগ থেকে ১৮ ই মার্চ পদত্যাগ করেন।
আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করে মাওলানা ভাসানী ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি’ গঠন করলেও বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তে আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী কমিটি ভাসানী সাহেবের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নি।ভাসানী সাহেবের পদত্যাগের পরও পরবর্তীতে ৫৭ সালের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছায় ভাসানী সাহেবকেই আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয় মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশকে। সহ-সভাপতির তিনটি পদ এবং ইয়ার মোহাম্মদ খানের সম্মানে কোষাধ্যক্ষ পদটিও ফাঁকা রাখা হয়।
রাজনীতিতে এ ধরনের নজীর বিরল। ৫৭-৬৪ দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়েই চলেছে আওয়ামীলীগ। এ সময় মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে থাকলেও মূলত সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন দলের সাধারন সম্পাদক বঙ্গবন্ধু।
১৯৬৬ তে ৬ দফা দেওয়ার পর দলের অনেক নেতা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে,৬ দফার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা তর্কবাগীশ ৬ দফার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ৬৬’র সম্মেলনে নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন। বঙ্গবন্ধু দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। সাধারন সম্পাদক হন তাজউদ্দিন আহমদ। সেই সম্মেলনের সমাপনী ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন-“৬ দফার প্রশ্নে কোন আপোষ নেই। রাজনীতিতেও কোন সংক্ষিপ্ত পথ নেই। নেতৃবৃন্দের ঐক্যেও আওয়ামীলীগ আর আস্থাশীল নয়। নির্দিষ্ট আদর্শ ও সেই আদর্শ বাস্তবায়নে নিবেদিতপ্রাণ কর্মিদের ঐক্যেই আওয়ামীলীগ আস্থাশীল।
আওয়ামীলীগ নেতার দল নয়, এ প্রতিষ্ঠান কর্মিদের প্রতিষ্ঠান।”
বঙ্গবন্ধু আরও বলেছিলেন-“সাঁকো দিলাম,স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য।এই আন্দোলনে কেউ যদি নাও আসে আমরা একাই রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব।ভবিষ্যত ইতিহাস প্রমাণ করবে আমাদের মুক্তির জন্য এটাই সঠিক পথ।”বস্তুত ৬ দফায় ছিল বাঙালীর স্বাধীনতার বীজমন্ত্র তথা অঙ্কুর।
৬ দফার আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বারবার কারাবরণ করেছেন।৬ দফা দেওয়ার পর দাবি আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বঙ্গবন্ধু ৩৫ দিনে ৩২ টি জনসভা করে ৮ বার গ্রেফতার হয়েছেন।কিন্তু ৬ দফার প্রশ্নে আপোষ করেন নি।৬ দফা আন্দোলনে আটক বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু সহ রাজবন্দীদের মুক্তির আন্দোলন এক পর্যায়ে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে রুপ নিয়েছিল।৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়েছিলেন এবং তুমুল আন্দোলনে স্বৈরশাসক লৌহমানব আইয়ু্ব খানের পতন হয়েছিল।যার ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭০’র ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল।বঙ্গবন্ধু জানতেন জনরায় ছাড়া জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া বাঙালীর আকাঙ্খিত স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না।এ কারনেই বঙ্গবন্ধু নির্বাচনের দাবি করেছিলেন এবং ৭০’র নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।অথচ মাওলানা ভাসানী সহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ৭০’র নির্বাচনে অংশগ্রহণে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন।কিন্তু পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল।বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষে জনতার বিপুল ম্যান্ডেট বাংলার মানুষের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন যে যৌক্তিক ছিল সেটিই বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে দেয়।এ কারনেই ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে ভারত,রাশিয়া সহ অনেক রাষ্ট্রই আমাদের পক্ষে জোরালো সমর্থন দেন।ফলে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয়।যার ফলাফল আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ থেকে পরিবর্তিত হয়ে গণমানুষের সংগঠনটি আজকের ‘বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এ রুপান্তরিত হয়।
ইংলিশ ভার্শন(In the English version)

“Bangladesh was born with the birth of Awami League”

With the birth of the East Pakistan Awami Muslim League, the East Bengal Muslim League activist camp at Mughaltulist No. 150 in Dhaka, led by the then organizing secretary of the Muslim League, Shamsul Haque, was deeply involved. The camp was on the ground floor of a three-storey building owned by Dhaka’s influential Muslim League leader Shawkat Ali. Shawkat Ali used to run all the expenses of the staff camp. He was a front-line activist of the language movement that started in ’48 and a close friend of Sheikh Mujibur Rahman, one of the leaders of the activist camp. However, the mastermind behind the establishment of the workers’ camp was Hossain Shaheed Suhrawardy, the leader of the progressive wing of the Bengal Provincial Muslim League, and Abul Hashim, a renowned Islamic scholar and general secretary of the Bengal Provincial Muslim League. All the organizational activities of the language movement were conducted from this cadre camp. After the independence of Pakistan on 14 August 1947, the leaders of the conservative faction led by Nazimuddin and Maulana Akram Khan became stronger.

They were indirectly supported by Muhammad Ali Jinnah, the founder of Pakistan. Nazim Uddin dismissed Suhrawardy as a member of the provincial legislature, calling him an ‘agent of India’ and an ‘enemy of Pakistan’. As a result, the leaders of the progressive wing of the Muslim League led by Hussain Shaheed Suhrawardy and Abul Hashim were cornered. In early 1948, Maulana Abdul Hamid Khan Bhasani was elected a member of the managing council of the Bengal Provincial Council from a seat in Tangail in a by-election nominated by the Muslim League. However, he continued to criticize the Muslim League government’s various activities against the interests of East Bengal. For this reason, the Muslim League government filed a case against him in the court with the intention of harassing him by calling his election flawed.

The Governor of East Bengal declared his election void by an executive order and declared the seat vacant. Maulana Bhasani left for Assam. He was arrested and kept in Dhubri jail. Subsequently, the date for the by-election of 6 seats was announced on 26 April 1949. In that election, Shamsul Haque was declared the candidate by the leaders of the 150 Mughaltuli activist camp against Khurram Khan Panni, the rich candidate of the Muslim League. The leaders of the workers’ camp raise money among themselves – some sell watches, some sell bicycles and thus create election funds. Bangabandhu’s ‘unfinished autobiography’ mentions the nomination of candidates for this election and the formation of an election fund. People first saw the use of the mic for the welfare of the Muslim League candidate in the election. Although a number of ministers and heavyweight leaders, including Prime Minister Nazimuddin of the Muslim League government, campaigned for Khurram Khan Panni, there were no significant leaders for Shamsul Haque, except for a few activists from the 150 Mughaltuli activist camp.

In the election, Shamsul Haque surprised everyone by defeating the heavyweight candidate of the Muslim League Khurram Khan by a huge margin of votes. Because everyone thought that Shamsul Haque was not a worthy candidate against Zamindar Khurram Khan Panni. This verdict was not so much against Khurram Khan Panni but against the injustice and injustice of the Muslim League government. The Muslim League government was shaken by this defeat. As a result, after that by-election, the provincial Muslim League government did not hold any more by-elections until the 1954 United Front elections. But the same thing happened with the winner Shamsul Haque. The huge victory in the election was not pleasant for him. The election was canceled in the same manner.

Thus, one after another anti-people activities of the provincial Muslim League government created a backlash against the Muslim League in the minds of the leaders of the Muslim League activists including Hussain Shaheed Suhrawardy, Maulana Bhasani and Shamsul Haque. At such a time, Hossain Shaheed Suhrawardy came to Dhaka to fight the “habeas corpus” case on behalf of East Bengal Muslim Chhatra League leader Dabirul Islam. At that time, Suhrawardy was approached by Shawkat Ali, the manager of the Muslim League activist camp who was close to him from the east. At this time Suhrawardy instructed him to leave the Muslim League and form a new party. Later, Shawkat Ali encouraged the leaders of the Shibir to form a new party. Maulana Bhasani came to Dhaka in 1949 after being released from Dhubri Jail in Assam. Arriving in Dhaka, he stayed at the house of Ali Amjad Khan. Although he did not come before the Muslim League cadres, he had contacts with Yar Mohammad Khan. Shawkat Ali briefed Maulana Bhasani about the political activities of the Mughaltulist activist camp No. 150 and the Muslim League Workers Camp during a discussion at Ali Amjad Khan’s residence.

Later, on the initiative of the Muslim League workers’ camp, it was agreed to form a political party as an alternative to the Muslim League. Realizing such an initiative, the League government arrested Sheikh Mujibur Rahman, one of the leaders of the Shibir, on April 24, just two days before Shamsul Haque’s Tangail by-election, and resorted to torture. Many are subjected to various pressures and temptations. But these misdeeds of the League government were of no use. In the hope of forming a party, it was decided to hold a staff conference on 23 June 1949. The conference was finally held at 3 pm on June 23 in the presence of about 300 workers at the historic “Rose Garden”, their privately owned mansion in KM Das Lane, Dhaka, at the behest of Kazi Humayun Bashir and Yar Mohammad Khan.

A political party called “East Pakistan Awami Muslim League” was formed at the staff conference chaired by eminent lawyer Ataur Rahman Khan. Maulana Abdul Hamid Khan Bhasani became the president of the party and Shamsul Haque was made the general secretary. Although there was no joint general secretary post in any of the contemporary political organizations of the Indian subcontinent at that time, Sheikh Mujibur Rahman, a young popular organizer of the Karmi Shibir, was made the No. 1 joint secretary in the organization in the belief of proper evaluation. Sheikh Mujib was in quarantine at that time. He was released from jail 5-6 days after the establishment of the new party. One thing to note is that there was no joint general secretary post in the Awami Muslim League in the committee where Sheikh Mujibur Rahman became general secretary in the 53rd conference. The treasurer of the party was Yar Mohammad Khan, one of the richest men of Dhaka at that time. He had a lot to contribute during the founding of the team and he spent a lot of money to strengthen the team. He used to bear all the expenses of many leaders of Awami Muslim League staying in Dhaka.

Most of the officers and members of the first committee of the Awami Muslim League were nominated by Maulana Bhasani, some of whom had no previous political experience. Many of them had no role in the formation of the team and the subsequent development of the organization. Many later became inactive, many resigned from the party. In this case, the question remains about Mr. Bhasani’s organizational Munsiana in the formation of the committee of the Awami Muslim League. However, after the formation of the team, he led with competence. At the workers’ conference on 23 June, General Secretary Shamsul Haque prepared a timely draft manifesto for the new organization, demanding full autonomy for all units in East Bengal and Pakistan. As a result, people came to know about the aims and objectives of the organization. However, he could not lead the team far. Because besides Bangabandhu, he and party president Maulana Bhasani were arrested within a few days. Bangabandhu was arrested on January 1, 1950 and was released on February 26, 1952 with a broken body after spending almost 28 months in jail. However, his physical condition was so bad that he took treatment and rest from home for about two and a half months.

From then until his arrest on May 30, 1954, he made a significant contribution to the organizational strengthening of the Awami League during these two years. As the party’s general secretary Shamsul Haque was in jail at the time, Sheikh Mujib, the party’s No. 1 joint general secretary, became the party’s acting general secretary. These two years were the organizational expansion of the Awami League in the early stages of party formation. At the forefront of which was Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. Although Shamsul Haque was released from prison a few days before the 53rd Conference, he suffered a mental breakdown due to government torture and the emotional pressure of leaving him with his beautiful wife’s two young daughters. As a result, he was expelled from the party and dropped out of the conference. At the conference, Sheikh Mujib was elected general secretary of the party.

Bangabandhu took a strong stand in favor of Maulana Bhasani’s decision in 1955 to abolish the word “Muslim” as a non-communal organization with the participation of people of all religions and castes without restricting the East Pakistan Awami Muslim League to the Muslim community. On the other hand Khan, Khandaker Mushtaq Ahmed and many others were against the removal of the word “Muslim”. With the assumption of the ministry by General Secretary Bangabandhu in 1956, a section led by Oli Ahad, the party’s organizing secretary, tried to create a circle within the party.

Bangabandhu resigned from the cabinet on May 30, 1956 and remained the general secretary of the party in the interest of strengthening the organization. Because Bangabandhu knew that there was no alternative to a strong organization for realizing the rights of the people of this country. If Bangabandhu had taken a different decision on that day, it is doubtful whether we would have got an independent state called Bangladesh even today. This decision of Bangabandhu will be considered as a landmark decision in the history of independence of Bangladesh. At the Kagmari Conference on 6-7 February 1956, a dispute arose between Maulana Bhasani and Hussain Shaheed Suhrawardy over the cancellation of the Pak-US military agreement by Awami League President Maulana Bhasani and the demand for autonomy for East Bengal. Bangabandhu Hossain took a stand for Shaheed Suhrawardy. Most of the leaders of the party led by Suhrawardy and Bangabandhu took a stand against the proposal of Maulana Bhasani. For this reason, under the leadership of Maulana Bhasani, many leaders including Yar Mohammad Khan and Oli Ahad resigned from the Awami League on March 16.

Although Maulana Bhasani resigned from the Awami League and formed the ‘National Awami Party’, the executive committee of the Awami League did not accept Bhasani’s resignation at the decision of Bangabandhu. To the debater. The three posts of vice-president and treasurer in honor of Yar Mohammad Khan were also left vacant. Such instances are rare in politics. The Awami League has been running with the acting president for almost 6 long years. Although Maulana Abdur Rashid Tarkabagish was the acting president of the Awami League at that time, Bangabandhu was the general secretary of the party. After giving 6 points in 6, many leaders of the party took a stand against Bangabandhu, against 6 points. Maulana Tarkabagish, the acting president of the party, took a stand against the 6 points and dropped out of the leadership at the 7th conference. Bangabandhu was elected president of the party. Tajuddin Ahmed became the general secretary. In his concluding speech, Bangabandhu declared, “There is no compromise on the 6-point question. There is no short cut in politics. The Awami League is no longer confident in the unity of its leaders. The Awami League is confident in the unity of dedicated workers.” . ”

Bangabandhu further said- “I gave the bridge to move from independence to independence. If no one comes in this movement, we will continue the movement on the streets alone. Future history will prove that this is the right path for our liberation.”
Bangabandhu was repeatedly imprisoned during the 6-point movement. After giving 6 points, Bangabandhu held 32 public rallies in 35 days to motivate the people and unite them. But he did not compromise on the 6-point question. A sedition case was filed under the name of Agartala Conspiracy Case. The Awami League won an absolute majority in the elections. Bangabandhu knew that the dream of independence of the Bengalis would not be realized without the mandate of the people. That is why Bangabandhu demanded elections and decided to participate in the elections of 1970. He objected. But later it was proved that Bangabandhu’s decision to participate in the election was correct The huge mandate of the people for the Awami League in the 70’s election under the leadership of Bangabandhu made the world understand that the freedom and independence movement of the people of Bengal was logical. That is why many countries including India and Russia strongly supported us in the liberation war of 1971. The result of which is today’s independent sovereign Bangladesh. After the victory in the great liberation war of 1971, the organization of the masses changed from East Pakistan Awami League to today’s Bangladesh Awami League.

 

Md. Nazrul Islam, columnist and young Awami League leader.

আপনার মতামত লিখুন :