অবশেষে ওরা জানতে পারলেন সবই ভূয়া গাংনীতে প্রতারক চক্রের ফাঁদ!
এবার বিদেশী সংস্থা থেকে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবাদের ভাতা কার্ড করে দেয়ার কথা বলে মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছে একটি প্রতারক চক্র। মোটা অংকের টাকা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীতের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় একটি সবুজ রঙের রশিদ। সোমবার সকালে ভুক্তভোগীরা প্রতারক চক্রের দেয়া রশিদ নিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে আসলে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। প্রতারক চক্রটি থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিস।
জানাগেছে, ‘বিদেশী সংস্থা সৌদিআরব সিসিডিবি অনুদানের তালিকা’ নামক একটি সবুজ রঙের রশিদ যার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ২০৮৬৫১, পুরুনের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ভাতা কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা দাবী করেন প্রতারক চক্রটি। তারা নগদ টাকা গ্রহণ ছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে। প্রতিটি গ্রাম থেকে একজনকে প্রতিবন্ধী,বয়স্ক ও বিধবা ভাতা কার্ড প্রদান করা হবে এবং অফিস খরচ বাবদ ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা দাবী করা হয়। অসহায় লোকজন মোটা অংকের টাকা পাবার আশায় তাদের দাবী অনুযায়ি টাকা প্রদান করে রশিদ সংগ্রহ করেন। চক্রটি সোমবার সকালে উপজেলা সমাজ সেবা অফিস আসতে বলে সটকে পড়ে।
উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা গ্রামের রুমিয়া খাতুন জানান, তিনজন লোক শুক্রবার সকালে গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মচারী পরিচয়ে বাড়িতে আসে। তারা ভাতা কার্ডের মাধ্যমে এককালীণ ২৫ হাজার টাকা পাইয়ে দেবে বলে জানায়। যারা সদস্যভুক্ত হবে শুধুমাত্র তারাই টাকা পাবে বলে জানালে রুমিয়া ধার দেনা করে ছয় হাজার টাকা প্রদান করেন। সেই সাথে সোমবার সমাজ সেবা অফিসে গিয়ে টাকা তুলতে বলেন।
একই কথা বলে রাইপুর ইউনিয়নের চঁাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে আমিনা খাতুনের কাছ থেকেও নগদ তিন হাজার টাকা এবং বিকাশ নম্বর ০১৭৪১৪৭৮১৮৮ তে নিয়েছে দু’হাজার টাকা। ছাতিয়ান গ্রামের ওমর আলী জানান, তার ছেলে শাহিনের প্রতিবন্ধী কার্ডের মাধ্যমে এককালীণ মোটা টাকা পাইয়ে দেবার কথা বলে নিয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রতারক চক্রটি অসহায় মানুষের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে অত্নগোপন করে। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা একে একে সমাজ সেবা অফিসে এসে টাকার কথা বলায় বিব্রত হয়ে পড়েন সমাজ সেবা কর্মকর্তা।
গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আরশাদ আলী জানান, গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একটি প্রতারক চক্র মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য মাঠে নেমেছে। অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা হারিয়েছেন। অনেকেই সমাজসেবা অফিসের নাম ভাঙ্গাচ্ছেন। জনগন সচেতন হবার পরামর্শ দেন এবং কেউ সুবিধা দেয়ার কথা বলে অনৈতিক অর্থ দাবী করলে তাদেরকে আটক করে পুলিশে দেয়ার অনুরোধ করেন এই কর্মকর্তা।